দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে: জামায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩৫
শেয়ার :
দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে: জামায়াত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘আওয়ামী সরকার জনগণের বাক-স্বাধীনতাসহ ভোট ও ভাতের অধিকার হরণ করেছে। ফ্যাসিবাদের জুলুম নির্যাতন মোকাবিলা করে এই সরকারকে বিদায়ের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আমাদের বিজয়ী হতে হবে।’

আজ শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত রুকন (সদস্য) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মজিবুর রহমান বলেন, ‘যুগে যুগে যারা ইকামাতে দ্বীনের কাজ করেছে তারা অনেক জুলুম নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে। এদেশেও জামায়াত ইকামাতে দ্বীনের কাজ করার কারণে অনেক জুলুম নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে। ইকামাতে দ্বীনের কাজের মাধ্যমেই মুমিনদের সফলতা নিশ্চিত হতে পারে। এ জন্য শাহাদাতের তামান্না নিয়ে সামনে অগ্রসর হতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াতের রুকনদের আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করতে হবে এবং পিতা-মাতার খেদমত করতে হবে। পরিবারকে ইসলামী আন্দোলনের ঘাটি বানাতে হবে। সন্তানদের আধুনিক জাহিলিয়াতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ইসলামের সঠিক শিক্ষা দিয়ে বড় করতে হবে। আওয়ামী সরকার জনগণের বাক-স্বাধীনতা সহ ভোট ও ভাতের অধিকার হরণ করেছে। ফ্যাসিবাদের জুলুম নির্যাতন মোকাবিলা করে এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে।’

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনলাইন প্লাটফর্ম জুমে অনুষ্ঠিত এই সদস্য (রুকন) সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির ও এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নানসহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও থানা আমীররা।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের দুর্বল অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের জন্য দোয়া করতে ও সাহায্য পাঠাতে হবে। কোনো ভয়-ভীতির তোয়াক্কা না করে সংগঠনের কাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। জালিম শাসকের বিরুদ্ধে হক কথা বলতে হবে। জামায়াত সবসময় অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। জেল-জুলুম, মামলা-হামলা, নির্যাতন ও হত্যার ভয় দেখিয়ে জামায়াতকে দমিয়ে রাখা যাবে না। এখন সময় এসেছে, জান-মালের কুরবানীর বিনিময়ে হলেও জুলুমবাজ সরকারের সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে। ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জামায়াতের সর্বস্তরের জনশক্তিকে কাজ করতে হবে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বিজয়ী হতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আধিপত্যবাদী শক্তি ও ইসলামের দুশমনেরা বসে নেই। তারা ৯২ শতাংশ মুসলমানদের দেশে শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে ইসলামের আদর্শ বাদ দিয়ে হিন্দুত্ববাদী শিক্ষা চালু করতে চাইছে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে একজন মুসলমানের সন্তানের ইসলাম সম্পর্কে জানার ও বোঝার সুযোগ নেই বললেই চলে। ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা চালু করতে হবে।’

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আল্লাহ দ্বীনকে বিজয়ী করতে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আমরা যদি সত্যবাদী ও মুত্তাকী হয় এবং ইনসাফ ও আদল কায়েম করতে পারি তবেই আল্লাহ আমাদের খেলাফতের দায়িত্ব দিবেন। ফ্যাসিবাদী সরকারের জুলুম নির্যাতন সহ্য করে ইকামাতে দ্বীনের কাজ করে যেতে হবে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর গণভিত্তি তৈরি করতে হবে। নিজস্ব ভোটব্যাংক তৈরি করতে হবে। আমাদের শীর্ষ নেতাদের শহীদ করে দেওয়া হয়েছে, আমীরে জামায়াতসহ অসংখ্য নেতাকর্মী কারাগারে বন্দী রয়েছেন, এটিএম আজহারুল ইসলাম ভাই দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন। আমরা সকল নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করছি। এ জমিনে আল্লাহর দ্বীন বিজয়ের মাধ্যমে আমরা সকল শহীদের রক্তের বদলা নিব ইনশাআল্লাহ।’

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা হলেও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ইসলামী আন্দোলনের রাজধানী। এ জন্য ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রত্যেক মানুষের কাছে ইসলামের সুমহান আদর্শের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা:)-এর আদর্শ ও কুরআনের বাণীকে হৃদয়ে ধারণ করে যুগের সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। সমাজ ও রাষ্ট্রের যাবতীয় ফিতনা থেকে জামায়াতের সকল পর্যায়ের জনশক্তিকে দূরে থাকতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর রুকনদের জ্ঞানের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে হবে।’