শীতে ঠোঁট ফাটা সমস্যায় করণীয়

ডা. জাহেদ পারভেজ
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
শীতে ঠোঁট ফাটা সমস্যায় করণীয়

শীতকালে ঠোঁট ফাটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। এ সময় ঠোঁটের ত্বক শুষ্ক থাকে। ফলে অনেকেরই ঠোঁট ফেটে যায়। শুষ্কতা রোধে অনেকে বারবার জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেন। কিন্তু এতে ফাটা বন্ধ হয় না, বরং আরও বাড়ে।

আমাদের ত্বকে থাকা সিবেসিয়াস গ্রন্থি থেকে একধরনের তৈলাক্ত (মেদ) বা মোমের মতো রস ক্ষরিত হয়। একে বলে সিবাম। এটি ঘামের সঙ্গে মিশে ত্বকে ছড়িয়ে যায় এবং ত্বক মসৃণ ও আর্দ্র রাখে। ফলে ত্বক ফাটে না। কিন্তু শীতকালে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে যাওয়ায় ঘাম কম হয়। এ কারণে সিবেসিয়াস গ্রন্থি থেকে বেরিয়ে আসা তেলতেলে পদার্থ শরীরের চামড়ায় ঠিকমতো ছড়িয়ে পড়তে পারে না। শরীরের শুকনো জায়গাগুলো তখন কুঁচকে গিয়ে ফেটে যায়।

শরীরের অন্য জায়গার তুলনায় ঠোঁটের চামড়া পাতলা। এছাড়া এর অবস্থান নাকের ঠিক নিচেই। ফলে নিঃশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে আসা গরম বাতাস ঠোঁট আরও শুকিয়ে দেয়।

যেসব কারণে সমস্যা বাড়ে : কিছু বিষয় আছে, যা ঠোঁট ফাটা আরও বাড়িয়ে দেয়। যেমন-বারবার জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট চাটার অভ্যাস, পুষ্টিহীনতা ও ভিটামিনের অভাব, প্রখর সূর্যের তাপ ও পানিশূন্যতা, বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খাওয়া, অ্যালার্জি, থাইরয়েডের সমস্যা এবং শরীরে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের অভাব। ঠোঁট কামড়ানোর মতো অভ্যাসেও ঠোঁট ফেটে যেতে পারে। আবার অনেক সময় ঠোঁটে লাগানো লিপস্টিক, লিপবাম বা লিপজেল সহ্য না হলে চুলকানি হয়ে ঠোঁট ফেটে যেতে পারে। এসব কসমেটিকসে ল্যানোলিন, স্যালিসিলিক অ্যাসিডের মতো উপকরণ থাকে। এগুলো ঠোঁটের সমস্যা বাড়ায়। অনেকের আবার সাইট্রাস– জাতীয় ফল বেশি খেলে ঠোঁট ফেটে যায়।

যা করবেন : ঠোঁট যাতে সব সময় ভেজা থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সারাদিনই কিছুক্ষণ পরপর লিপবাম বা ভ্যাসলিন জাতীয় ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে রাখতে হবে। বাইরে বেরোনোর আগে মুখের পাশাপাশি ঠোঁটেও সানস্ক্রিন দিতে হবে। ঠোঁটের লিপবামে সূর্য থেকে সুরক্ষা দেওয়ার মতো উপকরণ (এসপিএফ) আছে কিনা, দেখে নিতে হবে। শরীরে যাতে পানিশূন্যতা দেখা না দেয়, সেই জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। লিপস্টিক বা কসমেটিকস তুলতে ক্লিনজার ব্যবহার করবেন এবং এরপর পুরু করে ময়েশ্চারাইজার লাগাবেন। অ্যালোভেরার জেল লাগাতে পারেন। এছাড়া ঠোঁটে এক ফোঁটা ঘি লাগিয়ে রাখলেও ঠোঁট নরম থাকবে। মধু ও গ্লিসারিনের পেস্ট বানিয়ে লাগালে ঠোঁট ফাটবে না। চিনি ভালো স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করে এবং মৃত কোষ ঠোঁট থেকে তুলে ঠোঁট নরম করে রাখে।

ঠোঁটে নারকেল তেল লাগালেও ফাটবে না। যদি ঠোঁট ফেটে নিয়মিত রক্ত বের হচ্ছে-এমনটা মনে হয়, তা হলে অবশ্যই একজন ত্বক ও ডার্মাটোলজিস্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।

লেখক : চর্ম-যৌন ও হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিশেষজ্ঞ ও সার্জন

সহকারী অধ্যাপক, চর্ম-যৌন, অ্যালার্জি বিভাগ ও হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা

চেম্বার : ডা. জাহেদ’স হেয়ার অ্যান্ড স্কিনিক সেন্টার

১৫২/১ সাবামুন টাওয়ার, পান্থপথ মোড়, ঢাকা

০১৫৬৭৮৪৫৪১৯; ০১৭০৭০১১২০০