এনএসইউতে অ্যাম্বাসেডর টক সিরিজে কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক

অনলাইন ডেস্ক
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:০১
শেয়ার :
এনএসইউতে অ্যাম্বাসেডর টক সিরিজে কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক

বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বলেছেন, ‘এখন কোরিয়া ও বাংলাদেশ উভয়ের জন্যই সময় এসেছে, আগামী পঞ্চাশ বছরের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সমৃদ্ধ করার। কোরিয়া সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে স্বাধীনতা, শান্তি ও সমৃদ্ধিতে অবদান রাখতে বদ্ধপরিকর।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের সমাধানের জন্য বৃহত্তর ভূমিকা ও দায়িত্ব গ্রহণ করতে চাই এবং স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনসহ সার্বজনীন মূল্যবোধ সংরক্ষণ করতে চাই।’

আজ সোমবার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি) সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ এবং অফিস অফ এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স আয়োজিত অ্যাম্বাসেডর টক সিরিজে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাননীয় রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক।

‘আধুনিক কোরিয়া: ইতিহাস, গণতন্ত্র, অর্থনীতি, শান্তি ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক এই আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর আতিকুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অফিস অফ এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক ড. ক্যাথরিন লি। সিপিএস সমন্বয়ক ড. আব্দুল ওহাবের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।    

পার্ক ইয়ং-সিক বলেন, কোরিয়ার উদ্ভাবনের প্রতি দ্বায়বদ্ধতার পাশাপাশি এই খাতে গবেষণা ও বিনিয়োগ কোরিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে স্মার্টফোন শিল্প, সেমিকন্ডাক্টর শিল্প অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি কোরিয়ান সরকার যে শাসন, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা জোরদার করতে এবং দুর্নীতি মোকাবেলায় বিশেষ প্রচেষ্টা চালিয়েছে তা উল্লেখ করেন।   

তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, কোরিয়া ভাগের পর ৭৮ বছর অতিবাহিত হলেও দুই কোরিয়া একীকরণের জন্য সমর্থন দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার তরুণ প্রজন্ম মনে করে যে উত্তর কোরিয়া এখন একটি আলাদা দেশ, যা শুধুমাত্র সমস্যা সৃষ্টি করছে এবং তা দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য সহায়ক নয়।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, কোরিয়া ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের বাইরে তার অংশীদারদের সাথে সহযোগিতার সীমানা বিস্তৃত করতে চাইছে। এই লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করার জন্য, কোরিয়া অংশীদারিত্বের একটি বহুমাত্রিক এবং ব্যাপক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর; দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং আসিয়ান; দক্ষিণ এশিয়া; ওশেনিয়া; আফ্রিকান ভারত মহাসাগর; এবং ইউরোপ প্রতিটি উপ-অঞ্চলের জন্য তৈরি কৌশলগত অংশীদারিত্বকেও উন্নীত করবে।

শেষে রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন যে, ‘কোরিয়া ও বাংলাদেশ পারস্পরিক কল্যাণকর উপায়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও উন্নত করবে। গত পাঁচ দশকে উভয় দেশ যা অর্জন করেছে তার উপর ভিত্তি করে আগামী পঞ্চাশ বছরকে আরও সমৃদ্ধ করার উভয় দেশের জন্য এখনই সময়।’

অধিবেশনের সভাপতি হিসাবে, অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের জন্য একটি ভাল উদাহরণ হতে পারে কারণ আমরা কোরীয় উপদ্বীপের ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার অসাধারণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেকে শিক্ষা নিতে পারি।

উপস্থিত অতিথিবৃন্দ, দর্শক এবং গণমাধ্যমের সক্রিয় অংশগ্রহণ এই আলোচনাকে প্রাণবন্ত করে তোলে। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়, উন্নয়ন সংস্থা, দূতাবাস, মিডিয়া আউটলেট এবং অন্যান্য বিভিন্ন সংস্থার অংশগ্রহণকারীরা সরাসরি এবং অনলাইনে অংশ নেন। এতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এবং এসআইপিজিতে কর্মরত সদস্যরা অংশ নেন।