চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যায় নির্দোষ দাবি শীর্ষ সস্ত্রাসী ইমনের
নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে কারাগারে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনসহ চারজন নির্দোষ দাবি করেছেন।
আজ রবিবার ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক এম আলী আহমেদ শুনানির পর আগামী ৩ মার্চ এ মামলায় যুক্তি শুনানির দিন ঠিক করেছেন।
নির্দোষ দাবি করা অপর তিনজন হলেন আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী, তারিক সাঈদ মামুন ও ফারুক আব্বাসী।
এ মামলায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। পলাতক অপর চারজন হলেন ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন ও আদনান সিদ্দিকী। তারা পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ শুনানি করতে পারেননি।
আরও পড়ুন:
৩০০ আসনে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি গঠন
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের অ্যাডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর সাদিয়া আফরিন শিল্পী জানান, ট্রাইব্যুনাল মামলাটিতে বাদী নিহতের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরীসহ মোট ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মারা যাওয়ায় তার সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারেননি আদালত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশে ১১ বছর বিচার বন্ধ ছিল। এরপর উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ বাতিল হলেও সে আদেশ অজ্ঞাতকারণে সাত বছর বিচারিক আদালতে না আসায় বিচার বন্ধ ছিল। এরপর বিচারিক আদালত মামলার কেস ডকেট (সিডি) না পাওয়া নিয়ে প্রায় ৪ মাস বিচার শুরু হতে পারেনি। সোহেল চৌধুরীকে ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনায় তার বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে বিচারের জন্য পাঠানো হয় ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে।
আরও পড়ুন:
ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল বাবার
মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আসামি আদনান সিদ্দিকী ২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন।
১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই ট্রাম্পস ক্লাবের মধ্যে সোহেলের কথিত এক বান্ধবী নিয়ে আসামি আজিজ মোহাম্মদের সঙ্গে সোহেলের তর্ক হয়। উত্তেজিত হয়ে আজিজকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন সোহেল। সেদিন আজিজকে হত্যার চেষ্টাও চালান সোহেল। এ দুটি ঘটনার পর আসামিরা সোহেলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
হত্যার দিন সোহেল রাত ১টার দিকে বন্ধুদের নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) তোফাজ্জল হোসেন তাকে ঢুকতে না দেওয়ায় তখন তিনি চলে যান। সেদিন রাত আড়াইটার পর সোহেল ফের ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করলে শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাস ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক আব্বাস ও আদনান সিদ্দিকী সোহেলকে লক্ষ্য করে গুলি চালালে ঘটনাস্থালেই তিনি মারা যায়। খুনের পরপরই আদনান সিদ্দিকী হাতেনাতে ধরা পড়েন।