সংসদে একতরফা কথাবার্তা হচ্ছে: জি এম কাদের

রংপুর ব্যুরো
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৫৮
শেয়ার :
সংসদে একতরফা কথাবার্তা হচ্ছে: জি এম কাদের

জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘সংসদ আরও সুন্দর কার্যকর হয় যদি উত্তপ্ত হয়। সংসদে উভয়পক্ষ যদি সমানভাবে কথাবার্তা বলে তাহলে সংসদ সত্যিকার অর্থে কার্যকর এবং প্রাণবন্ত হয়। সেটা এখন পর্যন্ত হয়নি বলে আমরা ধারণা। নতুন সংসদ মোটামুটি গতানুগতিক চলছে। যেহেতু বিরোধী দলে সংখ্যায় আমরা অনেক কম। সংসদে এক তরফাভাবেই কথাবার্তা হচ্ছে, সরকারের পক্ষেই বেশিরভাগ কথা হয়।’

আজ শুক্রবার বিকেলে ৩ দিনের সফরে রংপুরে এসে মহানগরীর স্কাইভিউ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে বড় সমস্যা দানা বাঁধছে। মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধের কারণে সেখানকার মানুষ পালিয়ে আমাদের দেশে আশ্রয় নিচ্ছে, সেখানকার গোলাবারুদ আমাদের দেশে আসছে, এটা এখন একটা বড় ধরনের ক্রাইসিস বলে আমি মনে করি। সামনে কোন পর্যায়ে যাবে সেটা নিয়ে আমরা নিশ্চিত নই। তবে এখানে উদ্বেগ প্রকাশ বা উৎকণ্ঠিত হওয়ার কারণ আছে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে জি এম কাদের বলেন, ‘বিরোধী দল হিসেবে রোল পেলে করা যাবে না। বিরোধী দল হলে সরকারের বিপক্ষ শক্তি হতে হবে। আর মন্ত্রী হলে সরকারের পার্ট হয়ে গেলাম। সেখানে তখন আর বিরোধী দলের আর কিছু থাকে না। সংসদের কাজ হলো, বিরোধী দল সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে। সরকার মানে হলো, সম্পূর্ণ মন্ত্রীসভা-একত্রিতভাবে সরকার। মন্ত্রীসভার দোষত্রুটি তুলে ধরতে চাই, তাহলে তো আমি মন্ত্রীসভার সদস্য হওয়া সম্ভব নয়। এর বাইরে আমাকে থাকতে হবে। বিরোধী দলের রোল পেলে করতে হলে মন্ত্রীসভায় যাওয়া যাবে না আর মন্ত্রীসভায় গেলে এটা বিরোধী দলের রোল হবে না। তখন ন্যাশনাল গর্ভমেন্ট হতে হবে। দেশের ক্রাইসিস টাইম আমরা সবাইমিলে দেশ পরিচালনা করব। তবে সে রকম কোন অফার আমরা পাইনি। যদি সে রকম কোনো অফার আসে তাহলে সবকিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

জি এম কাদের বলেন, ‘পরিস্থিতি এখনো ভালো নয়। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। জিনিসপত্রের দাম লাগামহীন ভাবে বাড়ছে। সরকার অনেক ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলছে। কিন্তু কোনো পদক্ষেপেই আমরা এখন পর্যন্ত সুফল পাইনি। সব জিনিসের দাম বাড়ছে, মানুষের বেকারত্ব বাড়ছে। যারা কাজ করত তারা অনেক কর্মহীন হয়ে যাচ্ছে। আর যারা কাজ করছে তারা যা বেতন পাচ্ছে, সেই বেতন তাদের খরচের তুলনায় অনেক কম। অর্থনৈতিকভাবে মানুষ বিপর্যস্ত। সবমিলিয়ে মানুষকে জীবন নির্বাহ করতে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে।’

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, ‘আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক নিয়ে নির্বাচন হবে। আওয়ামী লীগ বলেছে নিজের ইচ্ছায় কাউকে প্রতীক দিবে না। যেহেতু তাদের সব জায়গায় একজনের বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়, সেটি তারা ডিসকারেজ করছেন না। জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তারা সেটা করেছে। আইন যেহেতু আছে, প্রতীক নিয়ে করতে হবে। আমরা প্রতীক নিয়েই করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেভাবেই আমরা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।

এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসিরসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।