রাবিতে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, আটক ৪
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়েছে। আজ বুধবার পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সদস্যরা তাদের আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের র্যাবের কাছে হস্তান্তর করে।
আটকেরা হলেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পালশা হাট কানপাড়া এলাকার মো. সিজান (২২), চৌবাড়িয়া এলাকার রাসেল মাহমুদ (২২), পালশা এলাকার কদর আলী (২৮) ও পুঠিয়া থানার শিমুল আলী (২০)। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে একটি ব্যাংকের চেক বই ও ফাঁকা স্ট্যাম্প (দলিল) উদ্ধার করা হয়। এ সময় একজন ভুক্তভোগীরও খোঁজ পান গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, আটক চারজন সংঘবদ্ধ প্রতারণা চক্রের সদস্য। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণায় জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে আসছে তারা। এ ছাড়া হোতার নামও তারা জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:
লরির ধাক্কায় পুলিশ সদস্য নিহত
ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী ওমর ফারুক বলেন, ‘প্রথমে এনামুল কবির আমাকে বলে যে, ‘‘অমুক দিন জয়েন হবে। তোমার কাগজপত্রগুলো দিলে চাকরি হয়ে যাবে”। কাগজপত্র দেওয়ার পরে জানায়, ‘‘অমুক দিন পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে। এটার জন্য ১৫ হাজার টাকি দাবি করলেও আমি ছয় হাজার টাকা দিয়েছি।” এরপর বলে যে, ‘‘অমুক দিন তোমার জয়েন।” এ জন্য আজ এখানে (রাবি) এসেছি। টাকা-পয়সার কোনো ডিল হয়নি। তবে বলেছিল, চাকরি হওয়ার পরে খুশি হয়ে কিছু দিলেই হবে।’
ভুক্তভোগীদের ওমর ফারুক গাজীপুরে গার্মেন্টসে চাকরি করেন। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার মিনারপারা গ্রামে।
আটকদের মধ্যে রাসেল মাহমুদ নিজেকে ভুক্তভোগী দাবি করেন। নিজেকে চাকরিপ্রত্যাশীর ভাই দাবি করে বলেন, ‘এনামুল নামে এক বড়ভাই আমার ভাইয়ের চাকরির কথা বলে তিনটি ব্যাঙ্ক চেক আর তিনটা স্ট্যাম্প নিয়ে এখানে (রাবি) আসতে বলেছেন। ওনার বাসা কোথায় জানি না, কিন্তু উনি রাজশাহীতে এসে দেখা করে গেছেন। দুই লাখ টাকার বিনিময়ে আমার ভাইকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখানে আসার পরে স্যাররা আমাকে ধরে নিয়ে এসেছে।’
আটক হওয়া বাকিরা দাবি করেন, তারা মোবাইল কেনার জন্য ক্যাম্পাসে এসেছেন এবং ক্যাম্পাস ঘুরে দেখছিলেন।
এ বিষয়ে রাবির প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘গোয়েন্দা সূত্রে আমরা জানতে পেয়েছি একটি গ্রুপ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আর্থিক লেনদেন করছে। এরপর আমরা প্রক্টরিয়াল বডি এবং গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনের সাহায্য নিয়ে তাদের আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসি। তাদের কাছ থেকে ব্যাঙ্ক চেক এবং নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পাওয়া গেছে। পরে তাদেরকে র্যাবের হাতে তুলে দিয়েছি। ভুক্তভোগী মামলা করার পরে বিষয়টা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও তদন্ত করবে। মনে হচ্ছে, এটার সঙ্গে আরও বড় চক্র জড়িত রয়েছে।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!