আসলাম চৌধুরীর মামলায় দুদক পরিচালকসহ ৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর সম্পদ বিবরণী দাখিল না করার মামলায় তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। সাক্ষীরা হলেন- দুদক পরিচালক ঋত্বিক সাহা, উচ্চমান সহকারী এ জেড এম হাছানুজ্জামান ও কনস্টেবল আসাদুজ্জামান।
আজ সোমবার ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আগামী ৪ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। এ নিয়ে মামলাটিতে ১২ জন সাক্ষীর মধ্যে চারজনের সাক্ষ্য শেষ হলো। এর আগে গত বছর ৮ জুন একই আদালত এ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন।
জানা গেছে, এ আসামির বিরুদ্ধে মোট ৬৮টি মামলা আছে। যার মধ্যে তিনটি মামলায় তিনি জামিন না পাওয়ায় এখনো কারাগারে রয়েছেন। তিনি গত ৭ বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন।
২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর উপপরিচালক মো. নাসির উদ্দিন দুদকের ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এই মামলা করেন।
আরও পড়ুন:
চীনা অ্যাপের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব মানুষ
মামলার এজাহারে বলা হয়, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার দক্ষিণ ভাটিয়ারির বাসিন্দা আসলাম চৌধুরী ও তার স্ত্রী নাজনীল চৌধুরীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু হয়। অনুসন্ধানে তার অর্জিত ২০ কোটি ৫৭ লাখ ৮৩ হাজার ৪৩৩ টাকার সম্পদের মধ্যে জ্ঞাতআয় বর্হিভুত ১ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৩ টাকা অর্জনের অভিযোগ পায় দুদক। এরপর দুদকের উপপরিচালক ঋত্বিক সাহা ২০১৯ সালের ১৩ মে আসলাম চৌধুরী ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের নামে-বেনামে থাকা সম্পদ অর্জনের তথ্য দুদকে দাখিলের জন্য নোটিশ দেন। তিনি কারাবন্দী থাকায় কারাগারেও নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশ পেয়ে তিন মাস সময় চেয়ে আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে ২১ কর্মদিবস, এরপর আরও ১৫ কর্মদিবস সময় দেয় দুদক। কিন্তু তিনি ওই সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে তিন মাস সময় চেয়ে ফের আবেদন করেন। সময় বৃদ্ধির সুযোগ নেই জানিয়ে তাকে নোটিশ দেওয়ার পরও তিনি সম্পদ বিবরণী দুদকে দাখিল করেননি। তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের আদেশ মোতাবেক সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলাটি তদন্তের পর ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
আরও পড়ুন:
ভারত সফরে গেলেন প্রধান বিচারপতি
২০১৬ সালের ১৫ মে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে আসলামকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। পরদিন ফৌজদারি কার্যবিধির (সন্দেহজনক) ৫৪ ধারার মামলায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর এ আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। ওই মামলায় ওই বছর ৩১ মে ৭ দিন এবং ৬ জুন ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। ওই রিমান্ড শেষে ওই বছর ১৩ জুন তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত।
উল্লেখ্য, আসলাম চৌধুরী ২০১৬ সালের ৫ মার্চ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত ভারতে অবস্থানকালে আইনানুগভাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাতের জন্য বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বহিভূত রাষ্ট্র ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মোন্দি এন সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যার কিছু ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
আসামিকে গ্রেপ্তারের পর জানায় যে, ওই সময় ভারতে অবস্থান করে মোসাদের এজেন্ট মোন্দির সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বৈঠক করে বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারকে অবৈধভাবে উৎখাতের জন্য দেশে সন্ত্রাস, নাশকতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করেন যা দেশে অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি স্বরূপ এবং রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল মর্মে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়।