সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় সাক্ষ্য শেষ

আদালত প্রতিবেদক
২৮ জানুয়ারী ২০২৪, ১৭:৩৯
শেয়ার :
সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় সাক্ষ্য শেষ

নব্বই দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের কার্যক্রম শেষ করেছেন আদালত। আজ রবিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক এম আলী আহমেদের আদালতে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ছিল। তবে, এদিন কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির হননি। এরপর আদালত মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করে আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি তারিখ ধার্য করেছেন।

সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের অ্যাডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর সাদিয়া আফরিন শিল্পী বলেন, ‘ট্রাইব্যুনাল মামলাটিতে বাদী নিহতের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরীসহ মোট ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মারা যাওয়ায় তার সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারেনি আদালত।’

এদিন শুনানিকালে আসামি তারিক সাঈদ মামুন হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, শীর্স সন্ত্রাসী সাজিদুল ইসলাস ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

মামলার অপর আসামি আদনান সিদ্দিকী ও ফারুক আব্বাসী, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ ও সেলিম খান জামিনে পলাতক আছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশে ১১ বছর বিচার বন্ধ ছিল। এরপর উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ বাতিল হলেও সে আদেশ অজ্ঞাতকারণে সাত বছর বিচারিক আদালতে না 

আসায় বিচার বন্ধ ছিল। এরপর বিচারিক আদালত মামলার কেস ডকেট (সিডি) না পাওয়া নিয়ে প্রায় ৪ মাস বিচার শুরু হতে পারেনি।

উল্লেখ্য, সোহেল চৌধুরীকে ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানীর ক্লাব ট্রামসের নিচে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় তার বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে বিচারের জন্য পাঠানো হয় ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আসামি আদনান সিদ্দিকি ২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। 

১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই ক্লাবের মধ্যে সোহেলের কথিত এক বান্ধবী নিয়ে আসামি আজিজ মোহাম্মদের সঙ্গে সোহেলের তর্ক হয়। উত্তেজিত হয়ে নায়ক সোহেল আজিজ বাইকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। সেদিন আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে হত্যার চেষ্টাও চালায় সোহেল। এ দুটি ঘটনার পর আসামিরা সোহেলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। হত্যার দিন সোহেল রাত একটার দিকে বন্ধুদের নিয়ে টমার্স ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) তোফাজ্জল হোসেন তাকে ঢুকতে না দেওয়ায় তখন তিনি চলে যান। সেদিন রাত আড়াইটার পর সোহেল ফের ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করলে শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজিদুল ইসলাস ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক আব্বাস ও আদনান সিদ্দিকী সোহেলকে লক্ষ্য করে গুলি চালালে ঘটনাস্থালে সে মারা যায়। খুনের পরপরই খুনি আদনান সিদ্দিকী হাতেনাতে ধরা পড়ে।