হলমার্ক কেলেঙ্কারির এক মামলার রায় ২৮ ফেব্রুয়ারি
এক যুগপর হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার জন্য আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত। আজ রবিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১-এর বিচারক মো. আবুল কাশেম রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার এ দিন ধার্য করেন।
মামলার আসামিরা হলেন হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর মাহমুদ, তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, জেনারেল ম্যানেজার তুষার আহমেদ, সেনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জিএম মীর মহিদুর রহমান, উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. সফিজউদ্দিন আহমেদ, ডিএমডি মাইনুল হক (বর্তমানে ওএসডি), এজিএম মো. কামরুল হোসেন খান (সাময়িকভাবে বরখাস্ত) ও নকশী নিটের এমডি মো. আবদুল মালেক কারাগারে রয়েছেন।
এছাড়া জামিনে রয়েছেন দুই উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শেখ আলতাফ হোসেন (সাময়িকভাবে বরখাস্ত) ও সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকার।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছেন প্যারাগন গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, সেনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জিএম ননী গোপাল নাথ (বর্তমানে ওএসডি), প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, সহকারী উপমহাব্যবস্থাপক মো. সাইফুল হাসান, নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মতিন, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিয়া, টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান, ডিএমডি (ওএসডি) সোনালী ব্যাংক মো. আতিকুর রহমান ও সোনালী ব্যাংক ধানমণ্ডি শাখার বর্তমান জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা মেরি।
রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করে দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, ‘দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৬/৪০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ধারায় অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। যেখানে দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় প্রতারণার জন্য সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড, ৪০৬ ধারায় অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গের জন্য সর্বোচ্চ ৩ বছর ও ৪০৯ ধারায় সরকারি কর্মচারী কর্তৃক অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের জন্য সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এছাড়া দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় সর্বোচ্চ ৭ বছর এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ধারায় সর্বোচ্চ ১২ বছর করে কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। আমরা আশা করছি আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।’
মামলা সূত্রে জানা গেছে, অস্তিত্বহীন ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের নামে প্রায় ৫২৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাত করেন। মামলায় আদালত চার্জশিটে মোট ৮১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। মামলাটিতে ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত।
হলমার্ক ঋণ কেলেঙ্কারির অন্যতম হোতা সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুমায়ুন কবির বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছেন। নিয়ম ভেঙে হলমার্ক গ্রুপকে অন্তত ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ঘটনা ফাঁস হলে দুদক মামলা করে। মামলা থেকে বাঁচতে তিনি বিদেশে পালিয়ে যান। প্রথমে মালয়েশিয়ায় আত্মগোপন করেন। সেখান থেকে কানাডায় পাড়ি জমান।
আরও পড়ুন:
মৌচাকের গোল্ডেন প্লাজায় অগ্নিকাণ্ড
সূত্র জানায়, হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা ৩৭টি মামলায় ওয়ারেন্ট রয়েছে। দেশে এলেই গ্রেপ্তার হবেন, এই আশঙ্কায় তিনি বিদেশেই নিরাপদ মনে করছেন। তবে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনাতে নানা মাধ্যমে চেষ্টা চলছে।