নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বাসে হামলা

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
২৪ জানুয়ারী ২০২৪, ১৮:৩৯
শেয়ার :
নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বাসে হামলা

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। কোর্স ট্যুর আয়োজনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত বলে জানা যায়। 

গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের এফআইকিউসি থেকে কোর্স ট্যুর শেষে ক্যাম্পাসে ফিরে আসার সময় রাত ১১টায় নোয়াখালীর দত্তেরহাটে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৩তম ব্যাচের ছাত্র আরিফুল হক তুহিন এবং মৎস ও সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৫তম ব্যাচের ছাত্র তারেক রহমান ইমন। 

জানা যায়, কোর্স ট্যুর আয়োজনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে সিনিয়রদের পক্ষ থেকে পরস্পরের মধ্যে সমাধান করে দেওয়া হয়েছে।  

বাসে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী মেয়েরা জানায়, কয়েকজন ছেলে বাসে উঠে ছেলেদের ওপর হামলা ও বাজেভাবে গালিগালাজ করে। এমনকি ক্যাম্পাসে গিয়ে মুখ খুললে দেখে নিবেও বলে হুমকি দেয়। 

বাস সুপারভাইজার বলেন, ‘চৌরাস্তা থেকে প্রত্যেকটা জায়গায় আমরা শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দিচ্ছিলাম। বাসের এক ছাত্র দত্তেরহাট নামবে বললে গাড়ি থামাতে বলে। পরে গেট খোলার পর দেখি কয়েকজন গাড়িতে উঠে মারামারি শুরু করেছে।’ 

ট্যুরের দায়িত্বে থাকা বিভাগের শিক্ষক এ.এফ.এম আরিফুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রামে ফিল্ড যাওয়ার পর যখন আমরা নোয়াখালী ফিরতেছিলাম তখন শিক্ষার্থীরা গান গেয়ে ও নাচতে নাচতে আসতেছিল। কারও মাঝে কোনো ঝামেলা বা ঝগড়া-বিবাদ দেখা যায়নি। আমি মাইজদী বাজার ক্রস করার সময় নেমে যাই। নামার আগে তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা সবকিছু ঠিকভাবে করবে বলে সম্মতি দেয়। কিন্তু হটাৎ করে এমন ঘটনা ঘটবে কখনো আশা করিনি। এফআইকিউসিতে ও তাদের এমন কোনো মনোভাব দেখিনি। পরে ছাত্ররা ফোন দিয়ে বললে রীতিমতো আশ্চর্য হই। বিভাগে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বললে বিস্তারিত জানতে পারব।’ 

অভিযুক্ত একই বিভাগের শিক্ষার্থী তারেক জানান, ‘ডিপার্টমেন্ট থেকে স্যার আমাকে ক্লাস প্রতিনিধি হিসেবে ট্যুর এরেঞ্জ করার দায়িত্ব দেন। আমি আমার বন্ধুদের নিয়ে কাজ করি। নাসির বা তার অন্য বন্ধুদের সঙ্গে কাজ করি না। গত ২ দিন আগে নাসির ডিপার্টমেন্টের সামনে আমাকে গালিগালাজ করে জোর গলায় জিজ্ঞাসা করে ‘‘সব কিছু তুই করবি না কি। স্যার কি তোকে একাই দায়িত্ব দিয়েছে কি না।” তখন আমি তাকে বলি, স্যার আমাকে অফিসিয়ালি দায়িত্ব দিয়েছেন তাই আমি দায়িত্ব পালন করতেছি। তখন তার আক্রমণাত্নক আচরণ দেখে আমি তাকে ধাক্কা দিলে সে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমার তলপেটে লাথি দেয়। পরে আমি বিষয়টি আমার বন্ধুদের বলি। ট্যুর থেকে ফিরে আসার সময় আমার বন্ধুরা আমাকে ফোন দিয়ে কোথায় আছি জিজ্ঞাসা করলে আমি বলি একটু পর দত্তেরহাট পৌঁছাব। আমি দত্তেরহাট নামলে তখন আমার বন্ধুরা বাসে উঠলে তাদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়।’ 

তারেক আরও বলেন, ‘তারা এখন মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। তুহিন ভাইয়ের নামে ও তারা মিথ্যা বলতেছে। আশেপাশের লোকজনের কাছে শুনেন তুহিন ভাই ঘটনার শেষের দিকে এসে দস্তাদস্তি থামিয়ে দেয়। পরে আমাদের বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে বাস ছেড়ে দিতে বলেন।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। আগামীকাল তাদেরকে একটা লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ দিলেই আমরা তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নিব।’