ঢামেকে একে একে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী

ঢামেক প্রতিবেদক
০৮ জানুয়ারী ২০২৪, ১৭:২৯
শেয়ার :
ঢামেকে একে একে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী

বিয়ের ৮ বছর পর দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে একে একে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী রুমা আক্তার (২৬)। 


আজ সোমবার ঢামেকের গাইনি বিভাগে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে থেকে বেলা ১১টার মধ্যে নরমালে জন্ম হয় তাদের। রুমা চাঁদপুর সদর উপজেলার দাশাদী গ্রামের শহিদ মোল্লার স্ত্রী। তার বাবার নাম মৃত মফিজ শেখ।


প্রথম কন্যাসন্তানের ওজন ১.৩ কেজি, দ্বিতীয় ছেলে সন্তানের ওজন ১ কেজি। তৃতীয় ছেলে সন্তানের ওজন ১.২ কেজি। চতুর্থ কন্যা সন্তান মৃত, তার ওজন হয়েছিল ১.২ কেজি। সর্বশেষ ছেলে সন্তানের ওজন ১.৩ কেজি। 


সন্তান ডেলিভারির দায়িত্বে ছিলেন ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের অভিজ্ঞ বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. নাজমা হক এর নেতৃত্বে একটি টিম। 


তিনি বলেন, জন্ম নেয়া তিন ছেলে, দুই মেয়ে। এই পাঁচ সন্তানের মধ্যে জন্মের সময় একজন কন্যা সন্তানকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। বাকি তিন ছেলে এক মেয়েকে নবজাতক বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটির মাকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। তিনি সুস্থ আছেন। 


নাজমা হক আরও বলেন, রবিবার দিবাগত রাতে প্রসব ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয় রুমা আক্তার (২৬)। পরে সকালে তাকে লেবার রুমে নেয়া হয়। ৯টা ৪০ মিনিটে প্রথম সন্তান নরমালে জন্ম হয়। পরে একে একে চার নবজাতকের জন্ম হয়। দীর্ঘ ৮ বছর পর এই প্রথম তার সন্তান জন্ম হয়। 


বিভাগীয় প্রধান বলেন, শিশুগুলো অপরিপক্ক অবস্থায় ২৯ সপ্তাহে জন্ম হয়। তাদের ওজনও কম। আমরা তাদের নবজাতক বিভাগের এনআইসিইউতে রেখেছি। এখন তাকে দেখভাল করবেন নবজাতক বিভাগের চিকিৎসকগণ। 


চার সন্তান জন্ম দেয়া রুমা আক্তারের স্বজনরা খুবই আনন্দিত। তার বোন মাকসুদা ও ভগ্নিপতি আলামিন রুমার পাশে রয়েছেন।


মাকসুদা বলেন, রুমার বিয়ের ৮ বছর হলেও তার কোনো সন্তান হচ্ছিলো না। পরে কনসেপ্ট হওয়ার তিন মাস পর আমরা জানতে পারি। পরে আল্ট্রাসোনো করার পর জানতে পারি তার চার সন্তান। তার প্রবাসী স্বামী শহিদকে জানিয়ে রুমাকে গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় (আমাদের বোনের বাড়িতে) নিয়ে আসি। এখানেই ছিল। রবিবার মধ্য রাতে তার প্রসব ব্যাথা শুরু হয়। তখন দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানতে পারি তার পাঁচ সন্তান। তবে জন্মের সময় এক সন্তান মৃত অবস্থায় জন্ম হয়। 


সন্তানগুলোকে সুস্থ অবস্থায় যেন বাসায় নিয়ে যেতে পারে তার জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন রুমার স্বজনরা।


এদিকে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, একজন প্রসূতি নারীর একসঙ্গে পাঁচ সন্তান জন্ম দেয়া খুবই কষ্টকর। তবে আমদের এখানে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের কারণে তা সম্ভব হয়েছে। 


তিনি বলেন, সন্তানগুলো অপরিপক্ক হওয়ায়, তৎক্ষণিক তাদের জন্য এনআইসিইউ প্রয়োজন হয়। আমরা দ্রুত ওই সন্তানদের জন্য তা ব্যবস্থা করেছি। তাদের জন্য যত ধরনের সহযোগিতা দরকার, তার ব্যবস্থা করা হবে।