গোলাপের পরাজয়ের নেপথ্যে

মাদারীপুর প্রতিনিধি
০৮ জানুয়ারী ২০২৪, ১৭:২৪
শেয়ার :
গোলাপের পরাজয়ের নেপথ্যে

অহংকার স্বেচ্ছাচারিতা ও জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকা মাদারীপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী আব্দুস সোবাহান মিয়া ওরফে গোলাপের পরাজয়ের মূল কারণ বলে দাবি কালকিনির সাধারণ মানুষের। এই আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রার্থী কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সংরক্ষিত আসনের এমপি অধ্যাপক মোসা. তাহমিনা বেগম নির্বাচিত হয়েছেন।

জানা গেছে, মাদারীপুর-৩ আসন (কালকিনি ও ডাসার) উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং মাদারীপুর সদরের পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৩৪০ জন। মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৪টি। সর্বমোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৬২ হাজার ১৯৬। এরমধ্যে বাতিল গণ্য হয়েছে ২ হাজার ১৬৯টি। প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৪৫.২৬ শতাংশ।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) অধ্যাপক মোসা. তাহমিনা বেগম পেয়েছেন ৯৬ হাজার ৬৩৩ ভোট এবং বতর্মান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবাহান মিয়া ওরফে গোলাপ নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬১ হাজার ৯৭১ ভোট।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচিত হওয়ার পর কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগকে দু’ভাগে বিভক্ত করেন গোলাপ। একভাগ নিজের আয়ত্তে নিয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে কালকিনি জনপদকে সন্ত্রাসের রাজত্ব গড়ে তোলেন গোলাপ। এবারও নৌকা প্রতীক পেয়ে তিনি মনে করেছিলেন, এমনিতেই নির্বাচিত হবেন। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগে কালকিনিতে নির্বাচনী জনসভায় নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। তাইত ফুরফুরা মেজাজে দাম্ভিকতা নিয়ে কালকিনি ডাসার উপজেলা চষে বেড়িয়েছেন, কিন্তু সাধারণ ভোটাররা তার জবাব দিয়েছেন ভোটের মাধ্যমে। গোলাপের দুর্গন্ধ মুক্ত করতে মাদারীপুর-৩ আসন গড়ে নতুন করে গড়তে নির্বাচনে জয়ী করেছেন তাহমিনা বেগমকে।

মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও মাদারীপুর প্রেসক্লাবের (একাংশ) সভাপতি গোলাম মাওলা আকন্দ জানান, ড. আব্দুস সোবাহান মিয়া গোলাপের বিপর্যয়ের মূল কারণ হচ্ছে তিনি বিগত ৫ বছর এমপি হওয়ায় এলাকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। তাছাড়া তিনি গত কয়েক বছরে সরকারি সাহায্য তার নিজ গ্রাম ছাড়া কালকিনি ও ডাসার নির্বাচনী এলাকায় দেন নাই। এছাড়াও বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মোটা অংকের টাকা খেয়ে যাদের মনোনয়ন দিয়েছিলেন তারা সকলেই পরাজিত। এলাকায় কথিত আছে, গোলাপের বাগানে আনারস (সতন্ত্র)-এর বাম্পার ফলন। তারপরও তিনি কিভাবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে জয় আশা করেন এটা বোধগম্য নয়।