নিক্সন চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আওয়ামী লীগের আবেদন
নির্বাচনী সভায় টাকা ছড়ানোর অভিযোগ এনে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আজ শনিবার ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. কামরুল আহসান তালুকদারের কাছে এ আবেদন করেছে ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগ।
ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহম্মদ সাইফুর রহমান আবেদনটি করেছেন। তিনি ফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কাজী জাফর উল্ল্যাহর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট।
ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে মুহম্মদ সাইফুর রহমানের স্বাক্ষরিত ওই আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, গত ২৮শে ডিসেম্বর দুপুরে ভাঙ্গা থানার উত্তর পাশে কাজী মাহমুদ উল্ল্যাহ কলেজের কাছের সেতুসংলগ্ন অটোস্ট্যান্ডে একটি নির্বাচনী সভায় প্রকাশ্যে ভোটারদের মধ্যে টাকা বিতরণ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সন চৌধুরী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ‘তিনি (নিক্সন) প্রকাশ্যে অর্থ বণ্টনের মাধ্যমে ভোটারদের প্ররোচিত করে নির্বাচনী আচরণবিধি ৩(১) ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন। নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে তার প্রার্থিতা বাতিল করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’ এ বিষয়ে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আমার নামে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। তারা খিচুড়ি খাওয়ার জন্য আমার কাছে কিছু টাকা চেয়েছিল, আমি তাদের বকশিস হিসেবে দিয়েছি। আমি এভাবে অনেক গরীব-দুঃখী মানুষকে সহযোগিতা করে থাকি, এটা নির্বাচনী বিষয় না।’
জানতে চাইলে কাজী জাফর উল্ল্যাহ বলেন, ‘আমি আশা করি যে, কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আমরা চাই, একটি অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন হবে। ভোটাররা যাকে খুশি তাকে ভোট দিতে পারবে।’
অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি আবেদন পেয়েছি। সেটি ইনকোয়ারি (অনুসন্ধান) কমিটিতে পাঠিয়েছি। ওই কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে বিষয়টি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে পাঠানো হবে।’
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ভাঙ্গা থানার পাশে কলেজ পাড়ে নির্বাচনী সভা শেষে এক কর্মীর হাতে নিক্সন চৌধুরী তার পাঞ্জাবির পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে দেন। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বক্তব্যের শেষের দিকে নিক্সন চৌধুরী বলছেন- ‘আগামী শনিবার আলগীতে আপনারা একটা বড় শোডাউন করবেন। কিন্তু নির্বাচনের আচরণবিধির জন্য আমরা আপনাদের কিছু বলতে পারতেছি না। তবে আপনারা খিচুড়ি খাবেন, সেই ব্যবস্থা আমি করে দিতে পারি।’
এ কথা বলার পরে নিক্সন চৌধুরী তার পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তির হাতে নিজের পকেট থেকে নগদ টাকা বের করে দেন।