ঢাবির আবাসিক শিক্ষকদের জন্য চালু হচ্ছে বিশেষ অ্যাপস
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলোর আবাসিক শিক্ষকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে বিশেষ অ্যাপস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দায়িত্বরত আবাসিক শিক্ষকদের সপ্তাহে দুদিন ও এক মাসে আট দিন হলের কক্ষ পরিদর্শন করতে হবে। পরিদর্শনকালে শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো জানবেন এবং প্রতিটি কক্ষের ভিডিও অথবা ছবিসহ অ্যাপসে ইনপুট করবেন। এতে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত হবে। তথ্য ইনপুট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সংশ্লিষ্ট হল প্রাধ্যক্ষ জানতে পারবেন। অ্যাপসটি আগামী দুই মাসের মধ্যেই চালু হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, বছরের বিশেষ কয়েক দিন (পয়লা বৈশাখ, রমজান উপলক্ষে ইফতার, দুই ঈদে খাবার বিতরণ ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা) ছাড়া আবাসিক শিক্ষকদের হলে খুব একটা দেখা যায় না। কিন্তু আবাসিক শিক্ষক হিসেবে ঠিকই সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে থাকেন তারা। বছরে হল কেন্দ্রিক দুই-তিনটি কর্মসূচি ছাড়া নিয়মিত হলে না আসা, ফ্লোর/ব্লক পরিদর্শন না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী, হলগুলোতে আবাসিক শিক্ষকরা সপ্তাহে অন্তত দুদিন নিজ নিজ ব্লক বা ফ্লোরের শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন মেটানোর লক্ষে অফিসে অবস্থান করবেন। মাসে অন্তত একবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবেন, কক্ষভিত্তিক হালনাগাদ তালিকা সংরক্ষণ করা এবং মাসে অন্তত একবার আবাসিক শিক্ষকদের একযোগে গ্রুপ ভিজিট করার নির্দেশনা রয়েছে।
মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রতিষ্ঠা হয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল অনুসরণ করে। এজন্য একে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হয়। সেই মডেল অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ সার্বিক বিষয়ের দেখভাল করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় আবাসিক শিক্ষক। যারা হলের বিভিন্ন ফ্লোর/ব্লক বা বিল্ডিংয়ের দায়িত্বে থাকেন। নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক, আর্থিক, শারীরিক-মানসিক বিকাশ, আবাসন সমস্যাসহ যাবতীয় বিষয় দেখাশোনার দায়িত্বে থাকেন।
তবে সূত্র জানায়, পূর্বে হলের আবাসিক শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অনেক কাজ করলেও বর্তমানে তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থীরা। পদটি যেন নামমাত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল আমাদের সময়কে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড। এর মূল কারণ হলো অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো যেভাবে পরিচালিত হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোও একই পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছে। অক্সফোর্ডে আবাসিক শিক্ষকরা হলগুলোতে তদারকি ও শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো জেনে যথাযথ ব্যবস্থা নেন। আমাদের হলগুলোতে এই ধরনের তদারকির ব্যবস্থা আছে। তবে এটিকে যেন আরও শক্তিশালী করা যায়, সেজন্য আমরা একটি অ্যাপস তৈরি করার পরিকল্পনা করছি।’
তিনি আরও বলেন,‘ দুই মাসের মধ্যেই এটি চালু হবে। আবাসিক শিক্ষকদের সপ্তাহে দুদিন হলে যেতে হবে। দায়িত্বশীল শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের রুমে গিয়ে অসুবিধাগুলো জানবে এবং সেগুলোর ছবি ও ভিডিওসহ অ্যাপসে ইনপুট দিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে এটি প্রভোস্ট ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা দেখতে পারবেন এবং উপাচার্য হিসেবে আমিও জানতে পারব। এর মাধ্যমে হলে শিক্ষার্থীদের অসুবিধাগুলো বহুলাংশে কমে যাবে।’