হাড়ক্ষয় রোগ প্রতিরোধে যে কাজগুলো করবেন
হাড়ক্ষয় (অস্টিওপরোসিস) বলতে শরীরের হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়াকে বোঝায়। এতে হাড় অনেকটা মৌচাকের মতো হয়ে যায়। এতে হাড় ঝাঝরা বা ফুলকো হয়ে যায়, অতিদ্রুত ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। মারাত্মক হাড়ক্ষয়ে হাঁচি বা কাশি দিলেও ভেঙে যেতে পারে। বয়স বেড়ে গেলে বা চল্লিশোর্ধ্বের পর থেকে শরীরের হাড়ক্ষয় বা এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে থাকে। কারও কারও এর আগেও হয়। যাদের ক্ষেত্রে হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি বেশি, তাদের দ্রুত হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে। নারীদের পিরিয়ডের পর হাড়ক্ষয়ের হার বেড়ে যায়।
লক্ষণ : শুরুতে হাড়ক্ষয়ের শারীরিক লক্ষণ নাও থাকতে পারে। কোমর, পিঠ বা অন্য কোথাও ব্যথা, কিন্তু ব্যথানাশক ওষুধ খেলেও কমছে না। কারও কারও দৈহিক উচ্চতা কমে যায়, কুঁজো হয় বা সামনে ঝুঁকে থাকে। তবে গোপনে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে মারাত্মক বিষয় হলো, মেরুদণ্ডে ফাটল বা চিড় ধরা। তখন ঠুনকো আঘাতেই হাড় ভেঙে যেতে পারে।
যাদের ঝুঁকি বেশি : সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে বয়স্করা, ট্রান্সজেন্ডাররা, যাদের জিনগত ত্রুটি আছে, যাদের অপারেশন করে ডিম্বাশয় ফেলে দেওয়া হয়েছে, হায়পোগোনাডিজমে আক্রান্ত যারা, যাদের উচ্চতা খুব কম।
যাদের শরীরে ভিটামিন-ডি’র ঘাটতি রয়েছে, যারা ধূমপান করেন, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন-এ এবং কে’র ঘাটতি রয়েছে যাদের শরীরে, আমিষনির্ভর খাদ্যাভ্যাস যাদের, বেশি বয়সে অতিরিক্ত চা, কফি ও চকোলেট গ্রহণের অভ্যাস রয়েছে যাদের, খাবার ও বাতাসে ভারী ধাতু গ্রহণ করে যারা, অতিরিক্ত কোমল পানীয় ও মদ্যপানের অভ্যাস আছে যাদের, যারা দীর্ঘদিন ধরে অচল, যারা দীর্ঘদিন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন করেন, তাদের অস্টিওপরোসিস হতে পারে।
আরও পড়ুন:
শীতে গর্ভবতী মায়েদের যত্ন
হরমোনজনিত অন্যান্য রোগ, যেমন- হাইপারথাইরয়িডিজম, হাইপারপ্যারাথাইরয়িডিজম, কুসিং সিনড্রোম, ডায়াবেটিস, অ্যাডিসন রোগ, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, এসএলই, কিডনি অকার্যকারিতা ইত্যাদি।
প্রতিকার : হাড়ক্ষয় একবার হলে আর প্রতিকার করা যায় না। প্রতিরোধের চেয়ে তাই প্রতিকার উত্তম। এক্ষেত্রে করণীয় হলোÑ নিয়মিত ব্যায়ামে হাড়ের শক্তি বাড়ে। এতে হাড়ের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে জয়েন্টগুলো সচল রাখে। শরীরের ভারসাম্য ঠিক রেখে হাড়ক্ষয় কমায়। ডাক্তারের পরামর্শে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্ট নিতে হবে। ক্যালসিয়ামের জন্য নিয়মিতভাবে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ও দুধজাতীয় খাবার খেতে হবে। ভিটামিন-ডি’র ৯০ ভাগ উৎস হচ্ছে সূর্যের আলো। প্রতিদিন ১৫-৩০ মিনিট সূর্যের আলোয় থাকুন, পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছ খান। এতে হাড় ভালো থাকবে। ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন। ডায়াবেটিস, লিভার, কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। হাঁটুর হাড়ের ক্ষয় বা অস্টিওআর্থ্রাইটিসের সঠিক পর্যায়ে লেজার মাক্রোফ্রেক্চার ও স্টেম সেল প্রয়োগে হাটু প্রতিস্থাপন বা ছাড়াই সম্পূন আরোগ্য লাভ সম্ভব।
লেখক : ব্যবস্থাপনা পরিচালক
আরও পড়ুন:
জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
ইনস্টিটিউট অফ লেজার সার্জারি ও হাসপাতাল আফতাবনগর প্রজেক্ট, ঢাকা
০১৭৫১৯৩১৫৩০, ০১৬১৮৪১৮৩৯৩