পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য বহিষ্কার হতেও রাজি জাপা নেতা

সিলেট-১ সংসদীয় আসন

সিলেট ব্যুরো
১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:৫৪
শেয়ার :
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য বহিষ্কার হতেও রাজি জাপা নেতা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে কোনো প্রার্থী দিতে পারেনি জাতীয় পার্টি। তাদের মনোনীত প্রার্থী জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বাবুল আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ‘সম্মান’ জানিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

বাবুলের এই ঔদার্যের প্রতিদান দিতে আজ বুধবার বিকেলে সিলেটের গোটাটিকরে তার ব্যবসায়িক কার্যালয়ে উপস্থিত হন আসনটির আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। কুশল বিনিময় শেষে তিনি বাবুলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সিলেট সম্প্রতির শহর। এখানে মানুষ ভিন্ন রাজনীতি করলেও দেশের উন্নয়নে ঐক্যমতে থাকেন এবং একে অপরকে সহযোগিতা করেন। সিলেটের সাবেক মেয়র (আরিফুল হক চৌধুরী) বিএনপির রাজনীতি করতেন, কিন্তু দুই মেয়াদেই তাকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছি। তার কাজে বাধা দিইনি। উৎসাহ দিয়েছি। কারণ আমরা উন্নয়ন প্রত্যাশা করি।’

একটি ভিভিও দেখে নজরুল ইসলাম বাবুলের সঙ্গে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত নেন জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘এই মানুষটির সঙ্গে আমার কোনো সখ্য নেই। নির্বাচন নিয়ে আলাপও হয়নি। কিন্তু একটি ভিডিও দেখে তার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতাবোধ তৈরি হলো। তিনি আমার জন্য দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে সিলেট-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। তাই আমার মনে হলো, তার সঙ্গে একবার দেখা করে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানানো দরকার।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (বাবুল) সদ্য অনুষ্ঠিত সিসিক (সিলেট সিটি করপোরেশন) নির্বাচনে মেয়র পদে দাঁড়িয়ে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে ৬০ হাজার ভোট পেয়েছেন। সেটি কম কথা নয়। তিনি চাইলেই সিলেট-১ আসনে আমার বিরুদ্ধে লড়তে পারতেন। তার এই ছাড় দেওয়া সিলেটের সম্প্রীতির রাজনীতির একটি অনন্য উদাহরণ।’

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন নজরুল ইসলাম বাবুল। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর কাছে তিনি পরাজিত হন। তবে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ভোট পেয়ে আলোচনায় আসেন।

বুধবার নিজ ব্যবসায়িক কার্যালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে নজরুল ইসলাম বাবুল বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পরিবার একটি অভিজাত পরিবার। তার ভাই সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম আবুল মাল আব্দুল মুহিত সিলেটের উন্নয়নের অনেক কিছু করেছেন। তিনিও অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন সিলেটের জন্য। এ অবস্থায় সিলেট-১ আসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাকে আমি উচিত মনে করিনি। তাই দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। এতে যদি দল আমাকে বহিষ্কার করে তবু আমার কিছু যায় আসে না। কারণ- আমি পদের লোভে রাজনীতি করি না।’

প্রচলিত আছে, সিলেট-১ আসনে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হয় সেই দলই সরকার গঠন করে। এ পর্যন্ত তার ব্যতিক্রম হয়নি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে জাতীয় পার্টি কোনো প্রার্থী না দেওয়ায় বর্তমান এমপি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থী, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।