সূতিভোলা খালকে পুনরুজ্জীবিত করলেন মেয়র আতিক
দখল, দূষণ আর ভরাটে অস্তিত্বহীন সূতিভোলা খালকে পুনরুজ্জীবিত করলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, ৪০ বছর পর সুতিভোলা খাল দিয়ে নৌকায় চড়ে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় যাতায়াত করছি। এটা ইতিহাস হয়ে থাকবে। তবে আমরা যেতে চাই বহুদূর। সুতিভোলা খাল হয়ে সাঁতারকুল দিয়ে আফতাবনগর পর্যন্ত নৌপথ চালু হবে সেভাবেই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর সূতিভোলা খাল পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
খাল উদ্ধার নিয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে মেয়র বলেন, এক সময় মানুষ নৌকায় চড়ে সাঁতারকুল থেকে কাওরানবাজার পর্যন্ত যেত। দিনের পর দিন ভরাটের ফলে সেই খালে এখন শুধুই কচুরিপানা। অবৈধ দখল আর ভরাটের ফলে নৌকা না চলে মানুষ হাঁটতো। এটার নাম সূতিভোলা খাল। সেই ঐতিহ্যবাহী সূতিভোলা খাল আর খাল ছিল না। সেখানে মানুষ হাঁটতো। এলাকাবাসী বলেছেন, ৪০ বছর পর্যন্ত খালটা উদ্ধারে কেউ উদ্যোগ নেয়নি। আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে খাল উদ্ধারের কাজ হাতে নিয়েছি। একের পর এক কাজ করছি। খাল নিয়ে কাজ করার সুফল আজ সূতিভোলা খালে নৌকায় চড়লাম। এটি ইতিহাস। ৪০ বছর আগে এই খালে নৌকা চলতো আজ ৪০ বছর পর সেই খালে আবার নৌকা চললো।
খাল উদ্ধারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে মেয়র বলেন, ঢাকা শহরে যে কোনো খাল বা খোলা জায়গার কেউ না কেউ মালিক। মালিক ছাড়া একটু জায়গাও নেই। খাস হলেও সরকারি জায়গা। তাই আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলেছি প্রত্যেককে চিঠি দিতে। কার দখলে কোন খাল জানা যাবে। দখলে থাকার কারণে আগে যেখানে নৌকা চড়ে যাওয়া যেতো আজ তা পুরোপুরি পারিনি কারণে একটু আগাতেই দেখি দখল হয়ে গেছে। খাল পারে বাড়ি উঠে গেছে। একটা বাড়ি খালের পাশে উঠে গেলো দেখার কেউ নেই! কে অনুমতি দিয়েছে? কীভাবে অনুমতি দিলো সেটা যাচাই করতে সমস্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। আবার খালের ভেতর বাঁশ দিয়ে বেড়া তৈরি করে মাছ চাষ করছে। এগুলো কারা করছে? এভাবে খাল দখল করে বাড়ি যা খুশি তাই করা যাবে না। সিএস ম্যাপ অনুযায়ী খাল উদ্ধার করা হবে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, উন্নত দেশগুলোতে বাড়ির সামনে খাল বা লেক রাখে। আমাদের এখানে খালকে বাড়ির পেছনে ফেলা হয় পরবর্তীতে সেই খাল ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এজন্য একের পর এক খাল দখল হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না।
ঢাকা উত্তর সিটির মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী সূতিভোলা খাল দিয়ে নৌকা নিয়ে সাঁতারকুল হয়ে আফতাবনগর দিয়ে হাতিরঝিল ঘুরে বালু নদীতে নৌকা চলাচল করা। নতুন একটি নৌপথ চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এজন্য প্রচুর অর্থ প্রয়োজন বলে জানান মেয়র। খাল উদ্ধার হলে খাল পারে হাঁটারপথ, সাইকেল লেন ও প্রচুর গাছ লাগানো হবে।
আরও পড়ুন:
মৌচাকের গোল্ডেন প্লাজায় অগ্নিকাণ্ড
তিনি বলেন, খাল পরিস্কার থাকলে মশা জন্মাবে না। মানুষ স্বস্তি পাবে। এজন্য জনগণকে সতর্ক হতে হবে। আর কেউ যেনো খাল দখল না করে। আমরা আজ কচুরিপানা পরিস্কার করে দিলাম। নতুন করে যেন কেউ দখল না করে। সে জন্য ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা আছে। খাল রক্ষায় এলাকাবাসীসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।