মিয়ানমারে দূতাবাসের উদ্যোগে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা দিবস পালিত
মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে জাতিসংঘ ঘোষিত ‘সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা দিবস- ২০২৩’ উপলক্ষে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। আজ মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), ইউএনঅপস ও নরওয়ে, ডেনমার্ক, থাইল্যান্ড, সুইডেনসহ বিভিন্ন দূতাবাসের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
ইয়াঙ্গুনের জনস্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টরসহ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘হেল্থ ফর অল: টাইম ফর একশন’ শীর্ষক বিষয়ের আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ডা. মো. মনোয়ার হোসেন। তিনি ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সকল জনগণের জন্য সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত পদক্ষেপসমূহের বিষয়ে উপস্থিত সকলকে অবহিত করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির সূচকগুলো তুলে ধরে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবায় বর্তমান সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের বিষয়ে আলোকপাত করেন।
তিনি বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর ফলে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। স্বাস্থ্যখাতে সরকারিভাবে কম অর্থ খরচ করা সত্ত্বেও নীতির ধারাবাহিকতা, স্বাস্থ্য কর্মীদের কর্মদক্ষতা, ঔষধ উৎপাদনের সক্ষমতা ও স্বল্প সম্পদের দক্ষ ব্যবহারের ফলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় কম খরচে ভাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অন্যতম উদাহরণ হিসেবে স্বীকৃত হয়ে আসছে।’
অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে ইয়াঙ্গুন জনস্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর হ্লা হ্লা উইন মিয়ানমারের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে চলমান বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী মিয়ানমারের চলমান সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মিয়ানমার কার্যালয়ের হেল্থ সিস্টেমসের উপদেষ্টা ডা. শক্তিভেল সেলভারাজ সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবায় শক্তিশালী হেলথ সিস্টেমসের প্রয়োজনীয়তা এবং এই লক্ষে যথাযথ বিনিয়োগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
আরও পড়ুন:
২৪ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৪৯ কোটি ডলার
এ সময় আরও বক্তব্য দেন ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত সুইডেনের দূতাবাস প্রধান জ্যাকব স্ট্রোম, নরওয়ের দূতাবাসের প্রথম সচিব কেজেটিল লিওন বোর্ডভিক, ইউএনওপিএসের হেড অব প্রোগ্রাম ডা. আয়ে ইউ সো এবং ইউনিসেফের প্রতিনিধি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ‘বিশ্বস্বাস্থ্য ও কূটনীতি’ শীর্ষক একটি প্রস্তাবনার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
জাতিসংঘ ঘোষিত টেইসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৩.৮-এ সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আর্থিক ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে জনগণের জন্য গুনগত মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার নিশ্চিতের লক্ষে ২০১৯ এবং ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশগ্রহণ করেন এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বিশ্বসভায় তুলে ধরেন।