মাদক বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ্ব, আড়াইহাজারে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে গুলি
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় মাদক বেচাকেনা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে গুলি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ওই নেতার নাম কামরুল হাসান ওরফে তুষার। তিনি ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। মাদক বিক্রিতে বাধা দেওয়ায় ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল প্রধান এ হামলা করেন বলে কামরুল অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় আজ শনিবার বাদী হয়ে আড়াইহাজার থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন কামরুল।
মামলার আসামিরা হলেন- ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি সোহেল মিয়া (৩৫), সাইফুল ইসলাম (২৭), মাসুদ মিয়া (২৮), হাবিবুর রহমান (২৭), শান্ত মিয়া (৩০), শিপন মিয়া (২৪), আল আমিন (২৮) ও মোবারক (৫৫)।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের তথ্যমতে, বালিয়াপাড়া জেলার অন্যতম মাদক বেচাকেনার স্থান। সোহেল প্রধান পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি।
এর আগে, গত ২ অক্টোবর একই এলাকায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। ওই ঘটনায় সোহেল প্রধানকে আসামি করে থানায় একটি মামলা হয়। মামলার পর সোহেল প্রধানের ব্যক্তিগত কার্যালয় ও বাড়িঘরে কয়েক দফা হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় কামরুল হাসান নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন সোহেল প্রধান। এর মধ্যে গতকাল রাতে কামরুলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটল।
গুলিবিদ্ধ কামরুল হাসান বলেন, ‘মাদক বিক্রিতে বাধা দেওয়া নিয়ে সোহেলের সঙ্গে তার পুরোনো বিরোধ চলমান। গতকাল রাতে তিনি ও তার দুই অনুসারী স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে খিচুড়ি রান্না করছিলেন। তখন তিনটি মোটরসাইকেলে লোকজন নিয়ে ওই এলাকায় আসেন সোহেল। বিষয়টি জানতে পরে তিনি ও তার অনুসারীরা পালানোর চেষ্টা করেন। তখন সোহেল ও তার লোকজন পেছন থেকে তাকে লক্ষ্য করে সাত থেকে আটটি গুলি ছোড়েন। একটি গুলি তার পায়ে লাগে। গোলাগুলির শব্দ শুনে এলাকাবাসী বাইরে বেরিয়ে এলে সোহেল লোকজন নিয়ে পালিয়ে যান।’
পুলিশ সূত্র জানায়, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ও সোহেল প্রধান বালিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখতে দুজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতায় গতকাল গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে সোহেল প্রধানের মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহাসান উল্লাহ বলেন, ‘কামরুলের পায়ে গুলি লেগেছে। হাসপাতালে নেওয়ার পর দেখা যায়, গুলি পা ভেদ করে বেরিয়ে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।’