‘কয়েক মিনিট দেরি হলে আমাকেও মারা যেতে হতো’

মালয়েশিয়া প্রতিনিধি
২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৬:৫৪
শেয়ার :
‘কয়েক মিনিট দেরি হলে আমাকেও মারা যেতে হতো’
ছবি : সংগৃহীত

‘কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। তাই একটু জিরিয়ে নেওয়ার জন্য ওপর থেকে নিচে আসি। এ সময়ই বিকট শব্দে ভবনটি ধসে পড়ে। কয়েক মিনিট দেরি হলে আমাকেও সহকর্মীদের মতো মারা যেতে হতো। আমি ভাগ্যবান যে বেঁচে গেছি।’

মালয়েশিয়ার পেনাং প্রদেশে গতকাল মঙ্গলবার রাতে নির্মাণাধীন ভবনধসে বেঁচে যাওয়া ৪৩ বছর বয়সী বাংলাদেশি মহিদুল ইসলাম দেশটির সংবাদ সংস্থা বারনামাকে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানান।

মহিদুল বলেন, ‘নির্মাণাধীন ওয়্যারহাউজের ওপর তলায় অন্য চারজনের সঙ্গে আমিও মেঝের কাজ করছিলাম। আমি একটু বিশ্রামের জন্য বিরতি নিয়ে বাহিরে আসি। তখনই এই ঘটনা ঘটে। হঠাৎ বিকট শব্দে আওয়াজ হলে ভয় পেয়ে যাই। পরে পেছনে এসে দেখি আমাদের নির্মাণাধীন ভবনটি ধসে পড়েছে। এই নির্মাণাধীন ভবনে গত তিন মাস ধরে আমরা কাজ করছিলাম। এখানে সবাই বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম। গতকালও একসঙ্গে কাজ শুরু করেছিলাম। সত্যি ভাবতেই খুব কষ্ট হচ্ছে।’

৩৮ বছর বয়সী, আরেকজন বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশি শ্রমিক বলেন, ‘আমি নিচের ফ্লোরে কাজ করছিলাম। হঠাৎ ভবন নড়ে ওঠে এবং ওপর থেকে চিৎকারের শব্দ আসে। আমি লাফ দিয়ে ভবন থেকে বেরিয়ে আসি। মুহূর্তের মধ্যেই ধসে পড়ে ভবনটি। ধ্বংস স্তূপ থেকে একজন শ্রমিক বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিল, কিন্তু তিনি গুরুতর আহত ছিলেন এবং পরে মারা যান।’

পেনাং পুলিশের উপপ্রধান ডেপুটি কমান্ডার দাতুক মোহাম্মদ ইউসুফ জান মোহাম্মদ বলেন, ‘ভবনের ভেতর ৯ জন আটকে ছিল। এরমধ্যে ৫ জনকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। ভবন ধসে এখন পর্যন্ত ৩ জন বাংলাদেশি নিহতের খবর পাওয়া গিয়েছে। এছাড়া এখনো উদ্ধার কাজ চলছে।’

পেনাং ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ বিভাগের উপপরিচালক জুলফাহমি সুতাজি বলেন, ‘ভবন ধসে স্তম্ভগুলো ভারী হওয়ায় উদ্ধার কাজে দেরি হচ্ছে এবং কঠিন হয়ে পড়েছে। সেগুলো সরাতে ও আটকে পড়াদের কাছে পৌঁছাতে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। দ্রুত স্তম্ভগুলো সরাতে আমাদের আরও বড় ও শক্তিশালী উদ্ধার যন্ত্র প্রয়োজন।’