ঢাবির হলের তালা ভাঙল ছাত্রলীগ, আসতে পারবেন না জানালেন প্রাধ্যক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের এক শিক্ষার্থীর রুমের তালা ভেঙেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই শিক্ষার্থী। তবে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ হল প্রাধ্যক্ষকে জানানো হলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে আসতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আসতে পারব না।’
গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে হলের ১০৩ নম্বর রুমে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও হল সভাপতি তানভীর শিকদারের অনুসারী বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম- মাহাদী হাসান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া তিনি দৈনিক যুগান্তরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সম্প্রতি হলের প্রাধ্যক্ষ হাউস টিউটরের মাধ্যমে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ১০৩ নম্বর রুমে তুলে দেন। তবে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তানভীর শিকদারের দুজন অনুসারী ওই রুমে উঠতে চায়। তারা বলেন, প্রাধ্যক্ষ নিজেই তাদের ওই রুমে উঠতে বলেছেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান প্রাধ্যক্ষকে জিজ্ঞেস করলে তাদের রুমে তোলার ব্যপারে জানেন না বলে জানান।
পরবর্তী সময়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রুমে তালা দিয়ে হলের বাইরে গেলে তার রুমের তালা ভেঙে ফেলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে বিষয়টি হল প্রাধ্যক্ষকে অবহিত করলে তিনি হলে আসতে অপারগতা প্রকাশ করেন। যদিও প্রাধ্যক্ষকে অবহিত করার দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা পরে সাড়ে ১১টার দিকে দুইজন হাউস টিউটর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান বলেন, ‘আমি সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে রুমে তালা মেরে ক্যাম্পাসে যাই। এ সময় আমি একজন শিক্ষকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সাড়ে ১০টার দিকে হলে ফিরি। এসে দেখি আমার রুমের তালা ভেঙে ফেলা হয়েছে। আমি মনে করি ছাত্রলীগের হল সভাপতি তানভীর শিকদারের দুজন অনুসারী আমার রুমের তালা ভেঙেছে, যারা পূর্বে আমার রুমে উঠতে জোর-জবরদস্তি করেছিল। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। ’
রাতে না আসার বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল রউফ মামুন বলেন, ‘আমাকে ঘটনা রাত ১০টা ৪৭ মিনিটে জানানো হয়েছে। তখন আমি ক্যাম্পাস ছেড়ে অলরেডি বাসায় চলে আসছি। তখন বলেছি, আমি হাউজ টিউটর পাঠাচ্ছি। আর হাউজ টিউটররা সেখানে গিয়ে সমস্যা সমাধান করে। একটু পর প্রক্টরিয়াল টিম সেখানে যায়।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা তানভীরকে একাধিকবার ফোন দিলে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত ১৪ নভেম্বর তানভীর শিকদারের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের এক কর্মচারীর কলার ধরে হুমকি দেওয়ার অভিযোগের নিউজ করায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তিনি ক্ষিপ্ত হন বলে জানা যায়।