শীতের দিনে নফল রোজা

ধর্ম ডেস্ক
১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৫২
শেয়ার :
শীতের দিনে নফল রোজা

মুমিনের প্রিয় ঋতু শীতকাল। এ সময় ইবাদত-বন্দেগির অবারিত সুযোগ পাওয়া যায়। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘শীতের রাত দীর্ঘ হওয়ায় মুমিন রাত্রিকালীন নফল নামাজ আদায় করতে পারে এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে পারে।’ (শুয়াবুল ইমান লিল বায়হাকি : ৩৯৪০) এ জন্যই নবীজি বলেছেন, ‘শীতকাল মুমিনের বসন্তকাল।’ (মুসনাদে আহমাদ : ১১৬৫৬)

শীতকালে অনায়াসেই রোজা রাখা যায়। দিনের সংক্ষিপ্ততা ও আবহাওয়ার শীতলতা রোজাকে সহজ ও ক্লান্তিহীন করে দেয়। তাই রমজানের কাজা রোজা আদায় করে দেওয়া এ সময়ের প্রধান কর্তব্য। এছাড়া বেশি বেশি নফল রোজা রাখার মোক্ষম সুযোগ শীতকাল। প্রিয়নবী (সা.) প্রতি মাসের ও সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে নফল রোজা রাখতে ভালোবাসতেন। সারা বছর আমরা যারা এসব রোজা রাখতে পারি না, তারা শীতের দিনগুলোতে এই সুন্নত পালনের চেষ্টা করতে পারি।

চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ নবীজি রোজা রাখতেন। শরিয়তের পরিভাষায় এগুলোকে বলা হয় ‘আইয়ামুল বিদ’-এর রোজা। বিদ শব্দের অর্থ সাদা ও আলোকিত। এই তিনদিনের রজনীগুলো চাঁদের আলোয় ধবধবে সাদা ও আলোকিত থাকে বলে এগুলোকে আইয়ামুল বিদ বলা হয়। রাসুল (সা.) বলেন, হে আবুজর, যদি তুমি প্রতি মাসে তিনদিন রোজা রাখতে চাও তাহলে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে তা পালন করো।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৭৬১)

সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবারও রোজা রাখা সুন্নত। প্রিয়নবী (সা.) এই দুই দিন রোজা রাখতে পছন্দ করতেন। আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.)-কে সোমবারের রোজা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি এর উত্তরে বলেছিলেন, ‘এই দিনে আমার জন্ম হয়েছে এবং এই দিনে আমাকে নবুয়ত দেওয়া হয়েছে বা আমার ওপর কোরআন নাজিল হওয়া শুরু হয়েছে।’ (সহ্হি মুসলিম, হাদিস : ১১৬২)

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘সোম ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই রোজাদার অবস্থায় আমার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করা হোক, এমনটি আমি পছন্দ করছি।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৭৪৭)

তবে বিরতিহীন নফল রোজা রাখা আল্লাহর পছন্দ নয়। কারণ দেহেরও অধিকার রয়েছে খাওয়া-দাওয়া করার। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘(নফল রোজার মধ্যে) আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় রোজা হলো দাউদ (আ.)-এর রোজা। তিনি এক দিন রোজা রাখতেন আর এক দিন রোজা ত্যাগ করতেন।’ (সহ্হি বুখারি, হাদিস : ৩৪২০)

আমাদের সময়/ টিটিএ