বিশ্বমানের পাঠক্রমে ফ্যাশন শিক্ষার নতুন দিগন্ত বিইউএফটি
ইন্ডাস্ট্রি লিংকের কারণে শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন বাস্তব অভিজ্ঞতা ও নিশ্চিত কর্মসংস্থান
পোশাক শিল্পের প্রাণকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে শিক্ষার নতুন সংজ্ঞা লিখছে বিইউএফটি। এখানে তত্ত্বের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় বাস্তব অভিজ্ঞতায়, বইয়ের পাতার চেয়ে বেশি শেখা যায় কারখানার মেশিনের পাশে। শিল্প খাতের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও গবেষণামুখী পাঠক্রমের মাধ্যমে বিইউএফটি হয়ে উঠেছে দেশের ফ্যাশন শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। এ বিষয়ে কথা বলেছেন বিইউএফটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার আইয়ুব নবী খান।
প্রশ্ন : আপনার বিশ্ববিদ্যালয় অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যতিক্রমী কী দিক রয়েছে যা একজন শিক্ষার্থীকে এখানে ভর্তি হতে আগ্রহী করে তুলবে?
উত্তর : বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউএফটি) দেশের উচ্চশিক্ষায় একটি অনন্য প্রতিষ্ঠান, যা শিল্প ও শিক্ষার বাস্তব প্রয়োগকে একত্র করেছে। আমরা শুধু তাত্ত্বিক জ্ঞানে নয়, বরং হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ ও শিল্পমুখী শিক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দিই। আমাদের পাঠক্রম তৈরি করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী; যেখানে পোশাক, টেক্সটাইল, ডিজাইন, ব্যবসা ও প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটেছে। এ ছাড়া বিইউএফটির বিশেষ শক্তি হলো শিল্প খাতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তাই শিক্ষার্থীরা নিয়মিতভাবে ইন্ডাস্ট্রি ভিজিট, ইন্টার্নশিপ ও গবেষণা প্রকল্পে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, যা তাদের কর্মজীবনের জন্য প্রস্তুত করে। আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সংস্থার সঙ্গে আমাদের একাডেমিক সহযোগিতা শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বমুখী দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন : ক্যারিয়ার গঠনে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় কী ধরনের ভূমিকা পালন করছে বলে মনে করেন?
উত্তর : বিইউএফটির মূল লক্ষ্যই হলো দক্ষ, উদ্ভাবনী ও নৈতিক পেশাজীবী তৈরি করা। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু ডিগ্রি অর্জন করুক তা নয়, বরং এমন সক্ষমতা অর্জন করুক যা তাদেরকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দাঁড়াতে সাহায্য করবে। আমাদের ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ, সাক্ষাৎকার প্রস্তুতি ও চাকরি সংযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া শিল্প বিশেষজ্ঞদের নিয়ে নিয়মিত সেমিনার, কর্মশালা ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের বাস্তবমুখী দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করছি। বিইউএফটি আজ এমন একটি প্ল্যাটফর্মে পৌঁছেছে, যেখানে শিক্ষা সরাসরি কর্মসংস্থানের সঙ্গে যুক্ত।
প্রশ্ন : শিক্ষার সঙ্গে গবেষণা আর প্রশিক্ষণ কতটা জরুরি এবং গবেষণায় আপনার বিশ্ববিদ্যালয় কতটা এগিয়ে?
উত্তর : শিক্ষার আসল লক্ষ্য কেবল জ্ঞান অর্জন নয় বরং নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও তার প্রয়োগ। এই কারণেই গবেষণা ও প্রশিক্ষণকে আমরা শিক্ষার অপরিহার্য অংশ হিসেবে দেখি। বিইউএফটিতে আমরা গবেষণাকে শিল্পের চাহিদার সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করি- বিশেষ করে টেকসই ফ্যাশন, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন, স্মার্ট টেক্সটাইল এবং সার্কুলার ইকোনমি বিষয়ে আমাদের গবেষণা কার্যক্রম ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যৌথভাবে বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পে কাজ করেন, যার অনেকগুলো আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণ ও হাতে-কলমে শেখার মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের শিল্প খাতের প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে চলার উপযোগী করে গড়ে তুলছি।
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
প্রশ্ন : জ্ঞান অর্জন করাই কি একজন শিক্ষার্থীর মূল উদ্দেশ্য? একজন উপাচার্য হিসেবে আপনি কী মনে করেন?
উত্তর : জ্ঞান অর্জন নিঃসন্দেহে শিক্ষার্থীর মূল লক্ষ্য, তবে সেটি একমাত্র নয়। জ্ঞান তখনই মূল্যবান হয়, যখন তা মানবকল্যাণে ব্যবহৃত হয়। একজন শিক্ষার্থীর উচিত জ্ঞান, নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ- এই তিনটি দিকের ভারসাম্য রক্ষা করা। আমি বিশ্বাস করি, একজন প্রকৃত শিক্ষার্থী শুধু পাঠ্যবইয়ের সীমায় আটকে থাকে না; বরং সমাজ, প্রকৃতি ও মানুষের কল্যাণে নিজের জ্ঞানকে প্রয়োগ করতে শেখে। বিইউএফটি সেই চেতনা নিয়েই কাজ করছে, যাতে আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু সফল পেশাজীবী নয়, বরং দায়িত্বশীল নাগরিক ও নৈতিক নেতৃত্বের ধারক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।