দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য
অধ্যাপক ড. মো. আবু হাসান ভূঁইয়ার সাক্ষাৎকার
ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেসের (ইউআইটিএস) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু হাসান ভূঁইয়ার সাক্ষাৎকার
প্রশ্ন : আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যতিক্রমী কী দিক রয়েছে, যা একজন শিক্ষার্থীকে এখানে ভর্তি হতে আগ্রহী করে তুলবে?
অধ্যাপক ড. মো. আবু হাসান ভূঁইয়া ঃ স্বল্প খরচে মেধাবী, দরিদ্র ও অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা যেন উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেই লক্ষ্য নিয়ে একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজসংস্কারক, শিক্ষানুরাগী, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সুফি মোহম্মদ মিজানুর রহমান ২০০৩ সালে বাংলাদেশে প্রথম আইটি ও বিজ্ঞানভিত্তিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (ইউআইটিএস) প্রতিষ্ঠা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের নভেম্বরে ঢাকাস্থ বারিধারার ডিপ্লোমেটিক জোন সংলগ্ন নয়নাভিরাম স্থায়ী ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম শুরু করে। এখানে চারটি অনুষদের ১০টি বিভাগে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে ১৬টি বিভিন্ন প্রোগ্র্যাম রয়েছে। এসব প্রোগ্র্যামে প্রায় ৩ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন।
এ বিশ্ববিদ্যালয় সুফি মোহম্মদ মিজানুর রহমান ফাউন্ডেশন বৃত্তি, রত্নগর্ভা তাহমিনা রহমান বৃত্তিসহ প্রায় ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন প্রকার শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করে থাকে।
আমাদের রয়েছে পূর্ণকালীন ও দক্ষ শিক্ষকমণ্ডলী, ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষ, উন্নতমানের আধুনিক ল্যাব, রিসার্চ সেন্টার, প্রায় ১৭ হাজার গ্রন্থসম্বলিত বিভাগভিত্তিক সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার এবং ইভটিজিং, ধূমপান ও রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস, যা একজন শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
প্রশ্ন : ক্যারিয়ার গঠনে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় কী ধরনের ভূমিকা পালন করছে বলে মনে করেন?
অধ্যাপক ড. মো. আবু হাসান ভূঁইয়া : আইসিটিভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষার্থীদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জ্ঞানসমৃদ্ধ ও দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। বিশ্বায়ন উপযোগী গ্র্যাজুয়েট তৈরির লক্ষ্যে ইউজিসি এবং বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের (বিএসি) নির্দেশনা মোতাবেক আউটকাম বেইজড এডুকেশন (ওবিই) শিক্ষা পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা এবং কারিকুলাম কী হবে এবং শিক্ষার্থীরা কোন কারিকুলামে পড়লে ভালো ফলাফল করে কর্মক্ষেত্রে সাফল্য লাভ করবে- এসব কিছু নিশ্চিত করার জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করছে। ভবিষ্যতে আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য আরও নতুন নতুন বিষয় যুক্ত করতে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের বাস্তবমুখী প্রায়োগিক নলেজ ডেভেলপমেন্ট করা থেকে শুরু করে আরএমজি সেক্টরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি তথা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের এমওইউ, শিক্ষার্থী ভিজিট, ইন্টার্নশিপ, জব ফেয়ার ও ওয়ার্কশপসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
ইউআইটিএসের দক্ষ শিক্ষকদের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক প্রতিযোগিতায় সাফল্য লাভ করছে। যুগের চাহিদানুযায়ী গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতের ব্যপারে আমরা কাজ করছি। সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আরও অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগসহ কারিগরি শিক্ষা উপকরণসমৃদ্ধ যুগোপযোগী ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব, লাইব্রেরি তথা ক্যাম্পাসকে আরও পরিবেশবান্ধব করতে প্রতিনিয়ত চলছে আমাদের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মযজ্ঞ। দেশ ও আন্তর্জাতিক কর্মক্ষেত্রের চাহিদানুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নতুন বিষয় ও বিভাগ খোলার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রশ্ন : শিক্ষার সঙ্গে গবেষণা আর প্রশিক্ষণ কতটা জরুরি এবং গবেষণায় আপনার বিশ্ববিদ্যালয় কতটা এগিয়ে?
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
অধ্যাপক ড. মো. আবু হাসান ভূঁইয়া : বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞানচর্চা, নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টি এবং তা সমাজের সার্বিক কল্যাণে প্রয়োগ করা। এ লক্ষ্যে আমরা প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকে গবেষণাকে প্রাধান্য দিয়ে আসছি। কারণ আমরা বিশ্বাস করি, একজন শিক্ষার্থী পড়ালেখার পাশাপাশি যখন গবেষণায় যুক্ত হবে, তখন তার শিক্ষায় পরিপূর্ণতা আসবে। বিশেষ করে আমাদের চেয়ারম্যান মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় আমরা শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন গবেষণার সঙ্গে যুক্ত করছি। আমাদের উন্নতমানের ল্যাব রয়েছে, যেখানে অভিজ্ঞ শিক্ষকগণের সহযোগিতায় গবেষণা পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য, দেশি-বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সাপেক্ষে গবেষণায় সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছানো। আশা করছি, ইউআইটিএস একটি আধুনিক গবেষণাবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠবে এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা পরিচয় বহন করবে।
প্রশ্ন : জ্ঞান অর্জন করাই কি একজন শিক্ষার্থীর মূল উদ্দেশ্য? একজন উপাচার্য হিসেবে আপনি কী মনে করেন?
অধ্যাপক ড. মো. আবু হাসান ভূঁইয়া : জ্ঞান অর্জন করাই একজন শিক্ষার্থীর মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত নয়। জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থী যেন প্রকৃত মানুষ হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করে এবং সমাজের উপকারে আসে, এই উদ্দেশ্য সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন সুফি মোহম্মদ মিজানুর রহমান। তাঁর এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে জ্ঞানসমৃদ্ধ ও দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আশা করি, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হলে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টি অচিরেই বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।