দুর্নীতির মামলায় শিবলী রুবাইয়াতের জামিন নামঞ্জুর
দুর্নীতির মামলায় বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দিয়েছেন। শুনানিকালে ঢাকা মহানগর আদালতে আসামিকে হাজির করা হয়।
আসামি পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার আসিফুর রহমান জামিন চেয়ে শুনানিতে বলেন, ‘শিবলী রুবাইয়াতের গাজীপুরে একটা পৈত্রিক জায়গা আছে। ২০২১ সালে বাবার জায়গায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিকের সঙ্গে ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও ভাড়া নেওয়ার জন্য চুক্তি করেন। সে চুক্তি অনুযায়ী টাকাটা এসেছে। পরে আরেকজন অবজেকশন জানিয়ে ওই টাকার দাবি করেন। এটা নিষ্পত্তির জন্য আদালতে মামলা হয়।’
পরে শিবলী রুবাইয়াত কথা বলার জন্য আইনজীবীর মাধ্যমে অনুমতি চান। কিন্তু আদালত আইনজীবীর উদ্দেশ্য বলেন, ‘আপনি উনার পক্ষে যথেষ্ট বলেছেন।’
এরপর দুদকের পক্ষে দেলোয়ার জাহান রুমি জামিনের বিরোধীতা করেন। এরপর আদালত তার জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেন।
আরও পড়ুন:
ভারত সফরে গেলেন প্রধান বিচারপতি
উল্লেখ্য, গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার দিকে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের উপপরিচালক (মানিলন্ডারিং) মো. মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে শিবলী রুবাইয়াতসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন মোনার্ক হোল্ডিং ইনকর্পোরেশনের চেয়ারম্যান জাবেদ এ মতিন, ঝিন বাংলা ফেব্রিক্সের প্রোপাইটর আরিফুল ইসলাম, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির দিলকুশা শাখার ফরেন এক্সচেঞ্জ বিভাগের সাবেক ইনচার্জ ইসরাত জাহান, ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকবাল হোসেন, এসইভিপি সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুয়া বাড়িভাড়া চুক্তিনামা দেখিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আসামি শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এক কোটি ৯২ লাখ টাকা বা প্রায় দুই লাখ ২৬ হাজার ৩০৮ ইউএস ডলার ঘুষ গ্রহণ করেন। এ ছাড়া ভুয়া বিক্রয় চুক্তি দেখিয়ে পণ্য রপ্তানি না করে প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির আশ্রয় গ্রহণ করে। ব্যাংক কর্মকর্তারা কাস্টমার ডিউ ডিলিজেন্স অনুসরণ না করে, পন্য রপ্তানির বিপরীতে কোনো প্রকার রেকর্ডপত্র না পেয়েও কর্তব্যে অবহেলা ও পরস্পর যোগসাজশে 'নিজের বা অন্য কারো অপরাধলব্ধ আয়ের অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে তিন লাখ ৬১ হাজার ইউএস ডলার টাকা বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে। এর মধ্যে তিনি এক কোটি ৮৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা নিজে গ্রহণ করেন।
এরপর গত ১৫ সেপ্টেম্বর এক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত ১৬ এপ্রিল প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৮৭ কোটি টাকার জমি অতি মূল্যায়ন করে এক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি, শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, সিআইবি প্রতিবেদন সংগ্রহ না করে এবং মর্টগেজ সম্পত্তি সরেজমিনে পরিদর্শন বা মূল্য যাচাই না করেই অস্বাভাবিক অতি মূল্যায়নের মাধ্যমে সদ্য নিবন্ধিত একটি কোম্পানির (শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড) নামে বন্ডের মাধ্যমে এক হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। এই অর্থের মধ্যে প্রথমে চলতি হিসাবে জমা হয়, এরপর ২০০ কোটি টাকার এফডিআর করা হয় এবং বাকি ৮০০ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয় বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে। সেখান থেকে সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে নগদ উত্তোলন করে অর্থ আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিং করা হয়।
আমাদের সময়/আরডি