সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার ফজিলত
ইবাদত-বন্দেগী মুসলিম জীবনের মূল ভিত্তি। নামাজ, রোজা, জাকাত ও হজের পাশাপাশি ইসলাম নফল বা ঐচ্ছিক ইবাদতের দ্বারও উন্মুক্ত রেখেছে, যাতে বান্দা সর্বদা আল্লাহর স্মরণে থাকতে পারে। এসব নফল আমলের মধ্যে সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা একটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত, যা নবী করিম হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়মিত পালন করতেন এবং সাহাবাদেরও এর প্রতি উৎসাহিত করতেন।
রোজা শুধু শারীরিক ত্যাগ নয়, বরং এটি আত্মার পরিশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের এক মহৎ উপায়। হাদিসে উল্লেখ আছে, সোমবার ও বৃহস্পতিবারে বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, আমি চাই আমার আমল যেন পেশ করা হয়, যখন আমি রোজাদার থাকি। (জামে তিরমিজি: ৭৪৭)
ক্ষমা ও সম্পর্কের বার্তা
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রসুলুল্লাহ (সা.) সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। তিনি বলেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবারে আল্লাহ তাআলা সকল মুসলমানকে ক্ষমা করেন, তবে তাদের নয় যারা পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেছে। তাদের বিষয়ে আল্লাহ বলেন, তারা মিল না হওয়া পর্যন্ত আমি তাদের ছেড়ে দিই। (ইবনে মাজাহ: ১৭৪০)
নবীজির বিশেষ যত্ন
আরও পড়ুন:
কোন সময় দোয়া করলে বেশি কবুল হয়?
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার প্রতি বিশেষ যত্ন নিতেন। (তিরমিজি: ৭৪৫)
সোমবারের ঐতিহাসিক তাৎপর্য
সোমবার ইসলামী ইতিহাসে একটি বিশেষ দিন। এই দিনেই জন্মগ্রহণ করেন মানবতার শ্রেষ্ঠ নেতা, বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং এই দিনেই তাঁর প্রতি প্রথম ওহী অবতীর্ণ হয়।
হযরত আবু কাতাদা আনসারী (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, এই দিনেই আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনেই আমার প্রতি ওহী নাযিল হয়েছে। (মুসলিম: ১১৬২)
আরও পড়ুন:
হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ২১ দিন
আত্মিক কল্যাণের আহ্বান
ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, সোমবার ও বৃহস্পতিবারের নফল রোজা মুমিনের আত্মাকে শুদ্ধ করে, অন্তরে প্রশান্তি আনে এবং গুনাহ মোচনের কারণ হয়। নবীজির এই আমল অনুসরণ করে প্রতিটি মুসলমান তার জীবনে বরকত ও আত্মিক শক্তি অর্জন করতে পারে।
উল্লেখ্য, সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোজা কেবল নবীজির সুন্নত নয়, এটি আত্মিক উন্নয়ন, গুনাহ মোচন ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের এক অনন্য উপায়।
আমাদের সময়/ টিটিএ
আরও পড়ুন:
চাঁদ দেখা কমিটির সভা কাল