এইচএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণ আবেদন শুরু আজ, করবেন যেভাবে
২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণ আবেদন আজ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আগামী ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত ফল পুনর্নিরীক্ষণের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। তবে এর জন্য প্রতি বিষয়ে ফি লাগবে ১৫০ টাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করা যাবে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। পুনর্নিরীক্ষণ আবেদন শুধু অনলাইন মাধ্যমেই গ্রহণ করা হবে। শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা অন্য কোনো অফিসে সরাসরি আবেদন করা যাবে না।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও বোর্ড নির্বাচন করে ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। প্রতিটি পত্রের জন্য ১৫০ টাকা হারে ফি প্রযোজ্য হবে। এরপর আবেদনকারীকে একটি মোবাইল নম্বর দিতে হবে, যেখানে পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশের পর এসএমএস পাঠানো হবে।
এতে বলা হয়, পরবর্তী ধাপে শিক্ষার্থীরা বিষয়ভিত্তিক ফল দেখতে পারবেন। এক বা একাধিক বিষয়ে পুনর্নিরীক্ষণের জন্য বিষয় নির্বাচন করে ‘ফি প্রদান করুন’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। দ্বিপত্র বিশিষ্ট বিষয়ের ক্ষেত্রে উভয় পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে। প্রদেয় ফি বিকাশ, নগদ, সোনালী সেবা, ডিবিবিএল রকেট বা টেলিটক মোবাইল সিমের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে। ফি পরিশোধের বিস্তারিত ধাপ ওয়েবসাইটের ‘হেল্প’ বাটনে পাওয়া যাবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, ফি পরিশোধের পর আবেদন জমা দিতে হবে ‘জমা দিন’ বাটনে ক্লিক করে। প্রয়োজনে ফি দেওয়ার আগে আবেদন পরিবর্তন বা পরিমার্জন করা যাবে ‘মুছে ফেলুন’ অপশন ব্যবহার করে। তবে একবার ফি পরিশোধের পর আবেদন বাতিল বা সংশোধন করা যাবে না এবং কোনো অবস্থাতেই ফি ফেরৎ দেওয়া হবে না।
এর আগে গতকাল সকাল ১০টায় দেশের সব শিক্ষা বোর্ডে একযোগে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ফল থেকে জানা যায়, নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এবার গত বছরের তুলনায় পাসের হার কমেছে ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ বছর জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৭ জন শিক্ষার্থী।
২০২৪ সালে গড় পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে গড় পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৬৪ দশমিক ৬২ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার ৫৯ দশমিক ৪০ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৪৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যশোর বোর্ডে পাসের হার ৫০ দশমিক ২০ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে পাসের হার ৫২ দশমিক ৫৭ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৬২ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে পাসের হার ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বোর্ডে পাসের হার ৫১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬২.৬৭ শতাংশ, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড পাসের হার ৭৫.৬১ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
এবারের এইচএসসি ও সমমানের লিখিত পরীক্ষা গত ১৯ আগস্ট শেষ হয়। ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২১ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। ১২ লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় বসেন ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ ছাত্র এবং ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ ছাত্রী। সারাদেশে ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়।
ঢাকা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ২ লাখ ৯১ হাজার ২৪১, রাজশাহীতে ১ লাখ ৩৩ হাজার ২৪২, কুমিল্লায় ১ লাখ ১ হাজার ৭৫০, যশোরে ১ লাখ ১৬ হাজার ৩১৭ ও চট্টগ্রামে ১ লাখ ৩৫ জন। এ ছাড়া বরিশালে পরীক্ষার্থী ৬১ হাজার ২৫, সিলেটে ৬৯ হাজার ৬৮৩, দিনাজপুরে ১ লাখ ৩ হাজার ৮৩২ এবং ময়মনসিংহে ৭৮ হাজার ২৭৩ জন। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষার্থী ৮৬ হাজার ১০২ জন। কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৯ হাজার ৬১১ জন।
আমাদের সময়/জেআই
আরও পড়ুন:
এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ আজ