আল-আজহারে বাংলাদেশি নবীনদের বরণ ও মেধাবীদের সম্মাননা
মিশরের ঐতিহ্যবাহী আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের “বিদেশি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উন্নয়ন কেন্দ্র” (مركز تطوير تعليم الطلاب الوافدين والأجانب) এবং বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সংগঠন “দারুল আরকাম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন মিশর”-এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সম্মাননা অনুষ্ঠান।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মদিনাতুল বুয়ূস আল ইসলামিয়ায় অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম অনুষদের অধ্যাপক ড. হুসাম শাকের।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কেন্দ্রের উপপরিচালক অধ্যাপিকা ড. শহিদা মরঈ নবাগত শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানান এবং কেন্দ্রের প্রধান ও আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপিকা ড. নহলা সাঈদির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান।
দারুল আরকাম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন মিশরের অর্থ সম্পাদক ওয়ালিউর রহমান জানান, বর্তমানে সংগঠনটির মাধ্যমে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের এক শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে ইসলামিক থিওলজি, শরিয়া ও ইসলামিক আইন, আরবি ভাষা ও সাহিত্যসহ বিভিন্ন অনুষদে ১৪ জন নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন দারুল আরকামের তত্ত্বাবধানে।
আরও পড়ুন:
২৪ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৪৯ কোটি ডলার
এক প্রশ্নের জবাবে ওয়ালিউর রহমান জানান, নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য এবার সাকান (আবাসন) বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে, যার আওতায় থাকা–খাওয়া ও মাসিক ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও দারুল আরকাম শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বৃত্তির উদ্যোগ নিয়েছে।”
অধ্যাপিকা ড. শহিদা মরঈ তার বক্তব্যে বলেন, ড. নহলা সাঈদি আল-আজহার বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়ক শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ তৈরিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা চাই, তারা জ্ঞান, সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতায় বিকশিত হয়ে নিজ নিজ দেশে মধ্যপন্থা ও ভারসাম্যের দূত হিসেবে গড়ে উঠুক।
প্রাক্তন গণমাধ্যম ও দাওয়াহ অনুষদের উপ-ডিন অধ্যাপক ড. মাহমুদ আস-সাওয়ি সমসাময়িক যুগের প্রেক্ষাপটে দাওয়াহর ভাষা ও কৌশলে নবায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, “গণমাধ্যম শিক্ষার মাধ্যমে সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি ও পরিবারকে মিডিয়ার নেতিবাচক প্রভাব থেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।”
ইসলামিক রিসার্চ অ্যাকাডেমির সহকারী মহাসচিব অধ্যাপক ড. মাহমুদ আল-হাওয়ারি তার বক্তব্যে বলেন, আজহারের দাঈরা হলেন সহনশীলতা ও মধ্যপন্থার দূত। তারা এমন বার্তা বহন করেন যা চরমপন্থা পরিহার ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে উৎসাহিত করে। তোমরাই আজহারের শ্রেষ্ঠ দূত—নিজ দেশে ফিরে গিয়ে জ্ঞান, ন্যায় ও ভারসাম্যের বার্তা ছড়িয়ে দাও।
অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন দারুল আরকাম আল ইসলামিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক শায়েখ সানাউল্লাহ আল আজহারী। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে দারুল আরকাম আল ইসলামিয়া বাংলাদেশের কার্যক্রম নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।