ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ, প্রশাসনের বক্তব্যে ছাত্রদলের ক্ষোভ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন–২০২৫-পরবর্তী অনিয়ম ও অসঙ্গতি নিয়ে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (ছাত্রদল)। সংগঠনটির দাবি, যথাযথভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই প্রশাসন অভিযোগগুলোকে ‘অনির্দিষ্ট ও সারবত্তাহীন’ বলে খারিজ করেছে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক ফররুখ মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর উত্থাপিত অভিযোগগুলোর বেশিরভাগই ভিত্তিহীন।
তবে ছাত্রদল বলছে, তারা নির্বাচনের তিন দিনের মধ্যেই সুনির্দিষ্টভাবে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছিল এবং প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের বহু প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় পরে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
ছাত্রদলের অভিযোগ, বিশেষত সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণের দাবি ‘অনির্দিষ্ট’ হিসেবে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, অথচ প্রার্থীরা হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের নির্দিষ্ট বুথের ফুটেজ পর্যালোচনার আবেদন করেছিলেন। তাদের মতে, ভোটকেন্দ্রের সিসিটিভি ভিডিও বিশ্লেষণ ছাড়া ভোটার উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক নিরসন সম্ভব নয়। এছাড়া ভোটার তালিকা প্রার্থীদের সরবরাহ না করা এবং পোলিং এজেন্টদের উপস্থিতি যাচাইয়ের সুযোগ না দেওয়াকেও একটি বড় ধরনের অনিয়ম হিসেবে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।
তাদের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা প্রকাশ নিয়ে আইনি জটিলতা থাকলেও আবেদনকারীদের কাছে আংশিক তালিকা (ছবি ও স্বাক্ষর বাদ দিয়ে) সরবরাহ করার সুযোগ ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বচ্ছতা বজায় না রেখে এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
প্রশাসনের বিবৃতিতে নীলক্ষেতে ব্যালট পেপার ছাপানো সম্ভব নয় বলে যে দাবি করা হয়েছে, তাতেও আপত্তি তুলেছে ছাত্রদল। তারা বলছে, নিউজ টুয়েন্টিফোরসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে যে নীলক্ষেতেই ব্যালট ছাপানো হয়েছে। তাই প্রশাসনের বিবৃতিকে ‘মিথ্যাচার’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে তারা। অভিযোগগুলো যথাসময়ে চিফ রিটার্নিং অফিসার এবং পরে উপাচার্যের কাছে জমা দেওয়া হলেও প্রশাসন সেগুলোকে দেরিতে উত্থাপিত বলে আখ্যা দিচ্ছে—এটিকেও ‘এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল’ বলে অভিহিত করেছে ছাত্রদল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, প্রশাসনের এই ভূমিকা শিক্ষার্থীদের শঙ্কা আরও ঘনীভূত করেছে। আমরা আশাবাদী, যথাযথ বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবিলম্বে একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে শিক্ষার্থীদের সামনে সত্য উপস্থাপন করবে।'
আরও পড়ুন:
গণভবনে ডাক পেলেন আ. লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা