জবির রেজিস্ট্রার দপ্তরে বড় রদবদল, জানেন না উপাচার্য
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের (চলিত দায়িত্বে থাকা উপাচার্যের) অনুমতি ছাড়াই রেজিস্ট্রার দপ্তরের ২৪ কর্মকর্তাকে অভ্যন্তরীণ বদলি (কাজের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন) করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার।
গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ পরিবর্তন কার্যকর করা হয়। কিন্তু এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ছুটিতে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। এর মধ্যেই এই আদেশ জারি করেন রেজিস্ট্রার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সিনিয়র কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, ‘উপাচার্য ছুটিতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেজিস্ট্রার তড়িঘড়ি করে বদলির আদেশ দেন। তার এ ধরনের ক্ষমতা নেই। এটি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারিতা।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট রঞ্জন কুমার দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানানা, বিশ্ববিদ্যালয় আইন কিংবা সংবিধিতে রেজিস্ট্রারের এমন ক্ষমতার উল্লেখ নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫-এর ১৩(ছ) ধারায় বলা হয়েছে, রেজিস্ট্রার সংবিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি দ্বারা নির্ধারিত অথবা একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট বা ভাইস-চ্যান্সেলর কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে রেজিস্ট্রার গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘এটি বদলি নয় বরং অভ্যন্তরীণ দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হয়েছে। এর জন্য উপাচার্যের অনুমতি প্রয়োজন হয় না।’
তবে তিনি স্বীকার করেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইন বা সংবিধিতে এর সুস্পষ্ট উল্লেখ নেই।
রুটিন দায়িত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি, তবে এতে আমার কোনো কনসার্ন ছিল না। উপাচার্য স্যার ছুটিতে আছেন, তিনি আদেশ দিয়েছেন কি না, সেবিষয়েও আমি জানি না।’
কেন রেজিস্ট্রার এ কাজ করেছেন, তা জানেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। বিষয়টি আমার নজরে এসেছে এবং আলোচনা চলছে। যৌক্তিক সমাধান হবে, ইনশাআল্লাহ।’
প্রসঙ্গত, এর আগেও রেজিস্ট্রারের সঙ্গে ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে কথা বলতে গেলে অসধাচরণের শিকার হন জবির দুই সাংবাদিক। একইসঙ্গে গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষক ইউজিসি ফান্ডেড স্কলারশিপ পাওয়ার পর ইউজিসি প্রদত্ত শর্ত অনুযায়ী একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর নিতে গিয়ে বাজে আচরণের শিকার হন তিনি।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের গ্যারেজ থেকে একাধিক সাইকেল চুরির ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে রেজিস্ট্রার এর সমাধান না করে উল্টো অভিযোগকারীর ওপর চড়াও হয়ে রুম থেকে বের করে দেন।
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
এসব ঘটনায় জবির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াস উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে কুশপুত্তলিকা দাহ করেন শিক্ষার্থীরা।