চাকসু নির্বাচন: মনোনয়নপত্র সংগ্রহ হাজার ছাড়াল
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন। উৎসবমুখর পরিবেশে এই নির্বাচনের মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার বিকেল তিনটায় ছিল মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ সময়। এদিন ভিড় থাকায় রাত ৮টা পর্যন্ত মনোনয়ন বিতরণ করা হয়। তিনদিনে সর্বমোট কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদ মিলে এক হাজার ৬৩টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ৪৭৪টি ও হল সংসদে ৫৮৯টি। এর বিপরীতে এবার মোট ভোটার রয়েছেন ২৭ হাজার ৬৩৭ জন।
আগামীকাল বুধবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। শেষ দিনে এসেও ছাত্রদল, ছাত্রশবিরের নেতাকর্মীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্রভাবেও প্যানেল নির্বাচন অংশ নিতে ফরম নিয়েছেন। একই দিনে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণার কথা জানিয়েছে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির।
ছাত্রদল একক প্যানেল দেওয়ার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। কেন্দ্র ও হল সংসদ নেতাকর্মীরা মনোনয়নপত্র নিলেও কে কোন পদে লড়বেন, তা উল্লেখ করা হয়নি।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আমরা চাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। আমাদের প্যানেল বা জোটের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী বাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সুষ্ঠু নির্বাচনের শঙ্কা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছি। প্রশাসন জামায়াত শিবিরের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার। তবুও আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করি।’
অন্যদিকে বাম ধারার পাঁচটি সংগঠনের গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটও আলাদা প্যানেল দেবে বলে জানান গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলর সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা আজ ৫০টি পদের জন্য ফরম নিয়েছি। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ২৬টি ও হল সংসদে জন্য ২৪টি। বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
গণভবনে ডাক পেলেন আ. লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা
ইসলামী আন্দোলন–সমর্থিত ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনও আলাদা প্যানেল দিচ্ছে। তাদের প্যানেলের নাম ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’। তারা এখন পর্যন্ত ১৮টি পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
এদিকে আজ দুপুরে প্রীতিলতা হলে ‘সংঘবদ্ধ ছাত্রী জোট’ নামে ১২ সদস্যদের প্যানেল ঘোষণা করেছে ইসলামী ছাত্রী সংস্থা।
সুষ্ঠু নির্বাচনের শঙ্কা করছে ছাত্রশিবিরও। ছাত্রশিবির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ৬০ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী একটা দলের সম্পৃক্ত। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সন্দিহান। তবে আমরা আশা করছি—নির্বাচনে সকল অনিয়ম, কারচুপি শিক্ষার্থীরা রুখে দিবে।’
আরও পড়ুন:
পাল্টে যেতে পারে আন্দোলনের ধরন
চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, ‘উৎসবমুখর পরিবেশে চাকসু নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থী বিশৃঙ্খলা করেনি। আমরা আশা করছি—সুষ্ঠু ও সুন্দর একটি নির্বাচন পরিচালনা করতে পারব।’