বিরল দৃশ্যের অবতারণা, কাবার ঠিক ওপরে চাঁদ
বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের কিবলা পবিত্র কাবা শরীফের ওপর দিয়ে গতকাল শুক্রবার ভোরে দেখা গেল এক বিরল চন্দ্রদৃশ্য। চাঁদ যখন ধীরে ধীরে কাবার ঠিক ওপরে চলে আসে, তখন মক্কার আকাশে তৈরি হয় এক অসাধারণ মহাজাগতিক দৃশ্য। এ সময় সেখানে উপস্থিত হাজারো মুসল্লি হয়ে যান ঐতিহাসিক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী।
জানা গেছে, এদিন ভোরে আকাশে দেখা যায় ক্ষীয়মাণ গিব্বাস চাঁদ (waning gibbous moon), যার অবস্থান ছিল ঠিক কাবার উপরে। সৌদি অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটির প্রধান মাজেদ আবু জাহরা জানান, এমন দৃশ্য খুবই বিরল এবং এটি প্রমাণ করে যে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে চাঁদ ও অন্যান্য গ্রহ-নক্ষত্রের গতিপথ গণনার যে পদ্ধতি রয়েছে, তা কতটা নিখুঁত।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার মাধ্যমে বিশ্বের মুসলমানরা কেবল আধ্যাত্মিক এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাননি, বরং এটি কিবলার দিক নির্ধারণে সহায়কও হতে পারে। ভবিষ্যতে আরও সঠিকভাবে নামাজের দিক নির্ধারণে এ ধরনের ঘটনা বিশেষভাবে কাজে আসবে।
আরও পড়ুন:
কোন সময় দোয়া করলে বেশি কবুল হয়?
শুধু তাই নয়, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁদ আরও একটি চমকপ্রদ দৃশ্যের জন্ম দেয়। এটি সপ্তর্ষিমণ্ডল (Seven Sisters বা Pleiades) নামের একটি বিখ্যাত নক্ষত্রপুঞ্জের সামনে দিয়ে অতিক্রম করে, যেখানে চাঁদের গতিপথে থাকা কিছু নক্ষত্র কিছু সময়ের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়। সৌদি আরবসহ আরব বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে এই দৃশ্য স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
এ ধরনের ঘটনাকে মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা শুধু আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্লেষণ করেন। চাঁদের গতি, কক্ষপথ ও অবস্থান মিলিয়ে গাণিতিক মডেলের সঙ্গে বাস্তব পর্যবেক্ষণ মিলিয়ে দেখা হয়। ফলে এসব ঘটনা জ্যোতির্বিদদের জন্য একধরনের লাইভ পরীক্ষা বলেই ধরা হয়।
আরও পড়ুন:
হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ২১ দিন
প্রাচীনকাল থেকেই মুসলিম সমাজে জ্যোতির্বিদ্যার গুরুত্ব অপরিসীম। নামাজের সময়, কিবলা নির্ধারণ, রোজা ও ঈদের চাঁদ দেখা – সবকিছুর সঙ্গেই জ্যোতির্বিজ্ঞানের গভীর সম্পর্ক। তাই আজও এমন একেকটি মহাজাগতিক ঘটনা বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধনে এক অনন্য উপলক্ষ হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:
চাঁদ দেখা কমিটির সভা কাল