জাকসু নির্বাচন /
ভোট গণনায় দেরির কারণ জানা গেল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায়। এর পর পেরিয়ে গেছে আরও ২০ ঘণ্টা। আজ শুক্রবার এখনো ভোট গণনা চলছে।
আজ রাতে ভোট গণনা শেষ হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব একেএম রাশিদুল আলম। একই সঙ্গে ভোট গণনা ও ফলাফলে এত দেরির কিছু কারণ উল্লেখ করেছেন তিনি।
জানা গেছে, জাকসু নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৩ জন। ভোট পড়েছে ৬৭ থেকে ৬৮ শতাংশ।
রাশিদুল আলম বলেন, ‘ওএমআর মেশিন দিয়ে ভোট গণনার জন্য প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু বেশ কয়েকজন প্রার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ম্যানুয়ালি (হাতে ভোট গণনা) করার সিদ্ধান্ত হয়। এতে করে এটা তো অবশ্যই স্বাভাবিক যে ম্যানুয়ালি হিসাব করলে একটু বেশি সময় লাগবে।’
নির্বাচন কমিশনের এই সদস্যসচিব বলেন, ‘সকাল ৯টায় ভোট গ্রহণ শুরুর কথা থাকলেও দুটি হলে কিছুটা দেরি হয়েছিল। দু-একটি হলে মাঝপথে কিছুটা সময় স্থগিত ছিল। বিশেষ করে গতকাল দুটি বড় হলে যেখানে ১ হাজারের বেশি ভোটার রয়েছেন, সেখানে দুপুর পর্যন্ত ভোট গ্রহণ খুব কম হয়েছিল। পরে বিকেল সাড়ে চারটা থেকে পাঁচটার দিকে লাইনে অনেক ভোটার চলে আসেন। নিয়ম অনুযায়ী তাদের সবাইকে ভোট প্রদানের সুযোগ দেওয়ার কথা। এটি করতে গিয়ে ওই ভোটকেন্দ্র থেকে ব্যালট বাক্স আসতেই প্রায় সাড়ে নয়টা বেজে গিয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী সব কেন্দ্রের ব্যালট বাক্স না আসা পর্যন্ত ভোট গণনা শুরু হবে না। এ কারণে ভোট গণনা শুরু করতেই রাত ১০টা বেজে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনার বিষয়ে সবার আগে থেকে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি বা জানাশোনা ছিল না, তাই ভোট গণনার শুরুর দিকে অনেকটা ধীর গতিতে কাজ এগিয়েছে। পরে অবশ্য ভোট গণনার গতি বেড়েছে।’
রাশিদুল আলম বলেন, ‘ সিনেট ভবনের কক্ষে শুরুতে পাঁচটি টেবিলে (প্রতি টেবিলে একটি হলের) ভোট গণনা শুরু হয়। এই টেবিলগুলো সিসিটিভির পর্যবেক্ষণে ছিল। পরে আজকে সকালে টেবিলের সংখ্যা বাড়িয়ে ১০টি করা হয়েছে। এসব টেবিলের পাশেও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। যাতে সবকিছু সবাই পর্যবেক্ষণ করতে পারে, রেকর্ড হয়।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
আরও এক-দুটি কারণের কথা বলেন রাশিদুল আলম। তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে অনেক হলের পোলিং কর্মকর্তা উপস্থিত থাকলেও পোলিং এজেন্ট অনুপস্থিত ছিলেন। পোলিং এজেন্টদের সামনেই ব্যালট বাক্স খোলা ও সব হিসাব করা উচিত। আবার সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা থাকা বাধ্যতামূলক। আমরাও সেই চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু এত সময় কিছু হলের পোলিং এজেন্ট উপস্থিত না থাকায় ভোট গণনায় দেরি হয়।’
প্রাথমিকভাবে যেসব কারণে ভোট গণনায় দেরি হয়েছিল, সেগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান রাশিদুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। তবে নির্ধারিত সময়ের বাইরে, শেষ মুহূর্তে ভোটারদের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ও তাজউদ্দীন আহমদ হলে ভোট শেষ হতে দেরি হয়। পরে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে ভোট গণনা শুরু হয়। আর সেই দৃশ্য এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি দেখানো হয়।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৭ জন। বিভিন্ন পদে মোট ১৭৮ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০ জন।