নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১টি অ্যাম্বুলেন্সই ভরসা ১১ হাজার শিক্ষার্থীর

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:১৪
শেয়ার :
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১টি অ্যাম্বুলেন্সই ভরসা ১১ হাজার শিক্ষার্থীর

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী এবং ৬০০ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য আছে মাত্র ১টি অ্যাম্বুলেন্স। জরুরি পরিস্থিতিতে এই একমাত্র অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়া গেলে বিপাকে পড়তে হয় শিক্ষার্থী-শিক্ষক সবাইকে। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, একাধিক রোগী এক সঙ্গে অসুস্থ হলে তৈরি হয় চিকিৎসা-সংকট।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার ‘ব্যথার দান’ নামমাত্র চিকিৎসা সেবা দিলেও কার্যত জরুরি পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মচারীদের যেতে হয় ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, নয়ত ২২ কিলোমিটার দূরের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আবাসিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সমস্যাও দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে।

অভিযোগ রয়েছে, একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি সবসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকে না। ময়মনসিংহ মেডিকেলে যেতে-আসতেই সময় লাগে দেড় ঘণ্টার বেশি। এ সময়ে অন্য কেউ অসুস্থ হলে বিপদের সম্ভাবনা থাকে। সম্প্রতি রিকশা থেকে পড়ে আহত হওয়া এক শিক্ষার্থীকে সময় মতো অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কারণ অ্যাম্বুলেন্স তখন আরেকজন রোগী নিয়ে বাইরে ছিল।

আবার যন্ত্রপাতির ত্রুটিতেও ঘটে বিপত্তি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরে ডুবে আহত শিক্ষার্থী ফুয়াদ হাসান অভিযোগ করেন, তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্সের অক্সিজেন সিলিন্ডার কাজ করেনি। এতে তার অবস্থার অবনতি ঘটেছিল।

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাইয়া ইসলাম সুচনা বলেন, ‘১০–১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স অপ্রতুল। জরুরি অবস্থায় দেরি হয়। বিশেষ করে রাতে কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে সেবা মেলে না।’

পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, বিশেষ করে রাতে অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে রোগীকে নিজ উদ্যোগে বাইরে নিতে হয়। এতে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

অতিরিক্ত চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. হেলাল উদ্দিন জানান, অ্যাম্বুলেন্স সংকটের কথা প্রশাসনকে বহু আগে জানানো হলেও এখনো সুফল পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘বর্তমানে একটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে পূর্ণ সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। একাধিক অ্যাম্বুলেন্স জরুরি প্রয়োজন। বাজেট স্বল্পতায় নতুন কেনা যাচ্ছে না, তবে বিকল্পভাবে চেষ্টা চলছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স যথেষ্ট নয়। ইউজিসিকে অবহিত করার পরও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা সিএসআর থেকে নতুন একটি অ্যাম্বুলেন্স আনার চেষ্টা করছি।’