‘বাংলাদেশের জনসংখ্যার চেয়েও শিবিরের বট আইডি বেশি’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশে যত জনসংখ্যা আছে, তার চেয়েও শিবিরের বট আইডি বেশি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যেও শিবির অনুপ্রবেশ করেছে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট চত্বরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
শিবির বিষয়ে ছাত্রদের কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি ক্যাম্পাস যেখানে বামদের মধ্যেও শিবির ঢুকে গেছে। তারা অন্য সংগঠনের পদ নিবে কিন্তু তারা শিবির নেতা। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে এমন নজির নেই। ৫ আগস্টের যত নারী বুলিংয়ের শিকার হয়েছে, কমেন্ট সেকশন থেকে তাদের আইডির ঘেটে দেখলেই বোঝা যায় তারা কোন আদর্শে বিশ্বাসী। বাংলাদেশে যত জনসংখ্যা আছে তার থেকেও শিবিরের বট আইডির সংখ্যা বেশি।’
ছাত্রদলের মধ্যে শিবিরের অনুপ্রবেশ ঘটেছে কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘প্রকাশ্যে রাজনীতি করা যাবে না, এমন রাজনৈতিক ইশতেহার যদি তাদের না থাকত, তাহলে বোঝা যেত তাদের সঙ্গে কত সংখ্যক রাজনীতি করছে। যেহেতু নেই, সেহেতু তারা বিভিন্ন অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। যার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি তাকেও শিবির সুকৌশলে অনুপ্রবেশ করিয়েছিল কি-না সেই শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘কোনো এলাকায় শিবিরের ১০ জন সদস্য থাকলেও সেই এলাকার শিবিরের সভাপতি যদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো পোস্ট দেয়, তাহলে সেখানে ১০ হাজার লোক কমেন্ট করে। আমার প্রশ্ন হলো এই লোকগুলো কি জান্নাত থেকে আসে? নাকি জাহান্নাম থেকে ছুটি নিয়ে আসে? আমরা জানি না। তাই আমি তাদের আহ্বান জানাই আপনাদের আসল জনবল সামনে নিয়ে আসুন। আড়াল থেকে লুকিয়ে বক্তব্য দেবেন না। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা এখন এমন রাজনীতি আর গ্রহণ করছে না।’
ছেলেদের ১১টি হলে ছাত্রদলের নতুন কমিটি দেওয়া হলেও মেয়েদের ৬টি হলে কমিটি দেওয়া হয়নি। এটা সাংগঠনিক দুর্বলতা কি না জানতে চাইলে আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের একটিমাত্র ক্যাম্পাস, যেটি দেশের অন্যান্য ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক সংষ্কৃতি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে একটি বিশেষ সংগঠন দুই তিনটি লেয়ারে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। এই ক্যাম্পাসের ৬টি মেয়েদের হলের প্রভোষ্টরা ইসলামী ছাত্রী সংস্থায় যোগ দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে থাকেন।’
তিনি বলেন, ‘কমিটি দেওয়ার সময় মেয়েদের হলগুলোতেও যথেষ্ঠ সংখ্যক নেতৃত্ব ও কর্মী আমাদের ছিল। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করলাম, যারা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, তাদের বুলিং করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আমাদের বোনেরা সবাই রিস্ক নিতে পারে না। যারা সম্মুখ সারিতে মিছিল মিটিং করেছে এই সাহসটুকু বুলিংয়ের কারণে সবাই পায় না। সবার পরিবার থেকেও অনুমতি দেওয়া হয় না। যার কারণে আমরা এখনো কমিটি দেইনি। এমন পরিস্থিতিতেও আমার যেসকল বোনেরা লড়ছে, তারা প্রকৃত অর্থে সাহসী। আমি মনে করি, দেশের সবচেয়ে সাহসী নারীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল করে। বুলিংয়ের কারণে অন্যরা সাহস পাচ্ছে না।’