নির্বাচনে গোছাল তামিম

ক্রীড়া প্রতিবেদক
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
নির্বাচনে গোছাল তামিম

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) নাজমুল হাসান পাপনের রাজত্ব শেষ হয়েছে। বর্তমানে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কোটায় বিসিবি সভাপতি হয়েছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। মাঝে কয়েক মাস সে চেয়ারে বসেছিলেন ফারুক আহমেদ। সামনে বিসিবি নির্বাচন। পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ চূড়ান্ত করবে নির্বাচন কমিশন। আসন্ন এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন তামিম ইকবাল। ইতোমধ্যে বেশ গোছালভাবেই তিনি কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এ ছাড়া বিসিবি নির্বাচনে আমিনুল ইসলাম বুলবুলও অংশগ্রহণ করবেন। বলে রাখা ভালো- বিসিবি নির্বাচনে কাউন্সিলরদের ভোটে পরিচালকদের ২৩ জন পরিচালক নির্বাচিত হন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নে সরাসরি পরিচালক হন আরও দুজন। সেই ২৫ পরিচালকের ভোটে সভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচিত হয়ে থাকেন। আমিনুল ইসলাম ও তামিম ইকবাল ছাড়াও বিসিবির পরিচালক পদে নির্বাচন করার কথা জানিয়েছেন মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। তিনি ‘ক্যাটাগরি সি’ থেকে নির্বাচন করার ইচ্ছে পোষণ করেছেন।

বেশ কিছু দিন ধরেই বাতাসে গুঞ্জন ছিল- তামিম বিসিবি নির্বাচনে অংশ নেবেন। তার ইচ্ছে বিসিবি সভাপতির চেয়ারেও বসা। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। সম্প্রতি জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক একটি জাতীয় দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘যদি প্রশ্ন করেন, আমি বিসিবির নির্বাচনে অংশ নেব কিনা। এটি বলতে পারি যে, খুব ভালো সম্ভাবনা আছে। এবার নির্বাচন করছি। আমি ক্রিকেটে বিনিয়োগ করেছি, দুটি ক্লাবের সঙ্গে আছি। কাউন্সিলর তো হবই।’

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। এরপর ক্রিকেটপাড়ায় বেশ সরব হয়েছেন তামিম ইকবাল। ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক রয়েছে বলেও বাতাসে গুঞ্জন। জানা গেছে, তামিমের সঙ্গে ঢাকার ৭২ ক্লাবের একটা অংশ রয়েছে। পাশাপাশি জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থায়ও তার বেশ ভালো সমর্থন আছে। এ ছাড়া তামিমের নিজ বিভাগ ও জেলা চট্টগ্রামসহ আরও একাধিক জেলা ও বিভাগের বেশ কজন তরুণ সংগঠককেও তিনি পাশে পাচ্ছেন। আসন্ন বিসিবি নির্বাচনে তামিম ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী হিসেবে যে কাউকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেন। পাশাপাশি তামিম সমর্থন পাচ্ছেন বিসিবির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলি আসগর লবির। বিএনপির সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেছেন, ‘আমরা দলের পক্ষ থেকে তামিম ইকবালকে বিসিবির সভাপতি হিসেবে প্রার্থী হতে বলেছি। তামিমের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হলে ওকে যদি ঠিকমতো আমরা চালিয়ে নিতে পারি তা হলে তামিম পারবে।’

আমিনুল ইসলাম বুলবুল বারবার বিসিবিতে নির্বাচন করার বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। ১৭তম বিসিবি হওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, ‘আমি কুইক একটা টি-টোয়েন্টি ইনিংস খেলতে এসেছি। আমি ভালো একটা ইনিংস খেলব, যেটা আপনারা মনে রাখবেন।’ তবে নিজের সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন আমিনুল ইসলাম। তিনিও নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘ এনএসসি’র সঙ্গে এখনও কোনো আলোচনা করিনি। শুধু বলেছি, সুযোগ পেলে আমি নির্বাচনে অংশ নেব।’ এবার ওয়ানডে ইনিংস খেলার কথা বলেছেন আমিনুল। তিনি বলেন, ‘ টেস্ট বা টি-টোয়েন্টি খেলা... আমি বলেছিলাম কুইক ইনিংস খেলার। সেটা এখনও শেষ হয়নি। কুইক ইনিংসটা শেষ হোক। আর যদি কন্টিনিউ করতে হয় টি-টোয়েন্টি থেকে ফিফটিতে (৫০ ওভারের ক্রিকেটে) যাব।’ তবে কোন আসন থেকে, কীভাবে লড়াই করবেন সে বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানিয়েছেন তিনি। জানা গেছে, ঢাকা বিভাগ থেকে নির্বাচন করতে পারেন আমিনুল ইসলাম এবং তিনি ঢাকা বিভাগ থেকে কাউন্সিলর হবেন। ঢাকা বিভাগে মোট ১৭ কাউন্সিলর। তার মধ্য থেকে গঠণতন্ত্র অনুযায়ী দুজন পরিচালক পদে নির্বাচিত হবেন। সেখানেই বুলবুলের নির্বাচন করে আসা তুলনামূলক সহজ হবে। বলে রাখা ভালো, বিসিবিতে নির্বাচনের ক্রাইটেরিয়া হলো তিনটি। এক. ঢাকার ক্লাব, দুই. জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা আর তিন. সার্ভিসেস, বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবেক ক্রিকেটারদের ভোটে।

বিসিবি সভাপতি হওয়ার লড়াইয়ে আমিনুল ইসলামের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তামিম ইকবাল না অন্য কেউ- সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।