বহিরাগত হামলাকারীরা ছিল শিক্ষকদের স্বজন, বলছে বাকৃবি প্রশাসন

বাকৃবি প্রতিনিধি
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:২২
শেয়ার :
বহিরাগত হামলাকারীরা ছিল শিক্ষকদের স্বজন, বলছে বাকৃবি প্রশাসন

বাকৃবি প্রশাসন প্রশাসন থেকে জানানো হয়, বহিরাগতরা ছিল অডিটরিয়ামে ৮ ঘণ্টা যাবৎ অবরুদ্ধ থাকা শিক্ষকদের স্বজন ও অভিভাবক। তবে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের এই মতের সঙ্গে এক মত না। 

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কম্বাইন্ড (বি.এসসি ইন ভেট ও এএইচ) ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের অর্তকিত হামলায় শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। 

গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার সংবাদ সম্মেলনে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী হিমেল বলেন, ‘শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ মদদে বহিরাগত গুন্ডা ও টোকাই বাহিনী এসে আমাদের ওপর হামলা করেছে। বহিরাগত এসব সন্ত্রাসীদের চেহারা মিডিয়াতে স্পষ্টভাবে এসেছে।’ এ সময় তিনি দ্রুত তাদেরকে গ্রেপ্তার করার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

এছাড়া এদিন বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হেলাল উদ্দীন স্বাক্ষরিত য়ে একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিবৃতিতে জানানো হয়, অবরুদ্ধ হওয়া তিন শতাধিক শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ শিক্ষক, হৃদরোগী, ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী, শারীরিকভাবে অসুস্থ ও গর্ভবতী নারী শিক্ষক। দুপুরের তীব্র গরমে, দীর্ঘ সময় অভুক্ত থাকা এবং মানসিক চাপের কারণে কয়েকজন নারী শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে বিকেলে অডিটরিয়ামের দক্ষিণ দিক ও মুক্তমঞ্চের গেট ভেঙে তাদের মুক্ত করা হয়। কে বা কারা তালা ভেঙেছে তা স্পষ্ট নয় এবং তা তদন্তসাপেক্ষ। এ সময় তাদের সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষার্থীর ধাক্কাধাক্কি হয়, এতে কয়েকজন আহত হন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ওইদিন সকাল ১১টায় একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা আহ্বান করা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন ২৫১ জন শিক্ষক। কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত ছয় দফা সুপারিশমালা আলোচনার পর সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, শুরুতে শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর প্রস্তুতি নিলেও পরবর্তীতে একটি ‘স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধনে’ পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যায়।

বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযোগ করে, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার পরও একটি মহল বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে ভাঙচুর চালিয়েছে। এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত সাড়ে ৯টায় সিন্ডিকেটের জরুরি ভার্চুয়াল সভা ডাকা হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা জেলা প্রশাসনের হাতে ন্যস্ত করা হয় এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। কারা শিক্ষার্থীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করছে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে তা খুঁজে বের করতে দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দোষী যেই হোক, তদন্তসাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’