পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ ঈদ: ড. কুদরত-এ-খোদা
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে আশেকে রাসুল জেনারেল অফিসিয়ালস অর্গানাইজেশনের (আর্গো) উদ্যোগে ‘শান্তির দূত হযরত মোহাম্মদ (সা.) এবং তার জীবনাদর্শ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর কাকরাইল রোডস্থ আইডিইবি মিলনায়তনে সরকারি-বেসরকারি পেশাজীবীদের নিয়ে এই সেমিনারটি হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মোহাম্মদী ইসলামের নেত্বত্ব প্রদানকারী ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর গুরুত্ব তুলে ধরে প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা বলেন, ‘পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হচ্ছে সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ ঈদ। হযরত রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্ম দিনে যারা খুশি হন, মহান আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেন। এই ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ১৯৯৬ সাল থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশে উদযাপন করা হচ্ছে। মহান সংস্কারক হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা (রহ.) হুজুরের প্রস্তাবে বাংলাদেশ সরকার এই দিনটি সরকারিভাবে ছুটি ঘোষণা করেন এবং বর্তমানে দিনটি উদ্যাপনে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
কোন সময় দোয়া করলে বেশি কবুল হয়?
ইমাম ড. কুদরত-এ-খোদা বলেন, ‘হযরত রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্ম এবং ওফাত একই দিনে সমাজে এমন ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। এই প্রেক্ষাপটে হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা (রহ.) পবিত্র কুরআন, হাদিস ও ঐতিহাসিক তথ্য দিয়ে প্রমাণ করেছেন, হযরত রাসুল (সা.)-এর ওফাত দিবস ১লা রবিউল আউয়াল। কারণ তিনি বিদায় হজের ৮১ দিন পর ওফাত লাভ করেছিলেন। কিন্তু ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে ১২ রবিউল আউয়ালকেই হযরত রাসুল (সা.)-এর ওফাত দিবস হিসেবে গণনা করা হচ্ছে। এতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানবের জন্মদিনে আনন্দিত হতে না পেরে মুসলিম জাতী অবারিত রহমত থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’
সেমিনারে বক্তারা বলেন, ‘বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) হলেন সর্বকালের, সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ মহামানব। মহান আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টি জগতের রহমত হিসেবে এ মহামানবকে প্রেরণ করেছেন। পবিত্র কুরআনে হযরত রাসুল (সা.)-এর আদর্শ সম্বন্ধে মহান আল্লাহ বলেন, “তোমাদের জন্য হযরত রাসুল (সা.)-এর মধ্যে রয়েছে সুন্দরতম আদর্শ।” হযরত রাসুল (সা.)-এর জীবনাদর্শ গোটা মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়। আজকের এই সেমিনারে দয়াল রাসুলের শুভাগমন থেকে শুরু করে তার বর্ণিল জীবনের বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপিত হয়েছে। যেগুলো দয়াল রাসুল (সা.)-এর সুমহান শিক্ষা, আদর্শ ও মর্যাদার বিষয় জানার সুযোগ করে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন:
হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ২১ দিন
সেমিনারে বক্তারা ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ধুমধামের সঙ্গে পালন করলে মহান আল্লাহ ও হযরত রাসুল (সা.) আমাদের ওপর খুশি হবেন। ‘ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)’ হচ্ছে হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্মের খুশি। এই খুশির দিনে যারা খুশি হন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদের ওপর সন্তুষ্ট হবেন।’
সেমিনারে বক্তব্য প্রদান করেন সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. পিয়ার মোহাম্মদ, বিশিষ্ট নজরুল গবেষক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. জাকীর হোসেন, সাবেক যুগ্ম সচিব মো. নুরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. আহসানুল হাদী, প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাছান, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. আবদুল আজিজ খলিফা, সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. ফারুকুল ইসলাম, হযরতুল আল্লাম মুহাদ্দেছ এমরান হোসাইন মাজহারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান প্রমুখ। বক্তারা দেশবাসীর সবাইকে ধুমধামের সঙ্গে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের আহ্বান জানান। সেমিনারটি উপস্থাপনা করেন পিইউবির সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নাছিরউদ্দীন সোহেল।
আরও পড়ুন:
চাঁদ দেখা কমিটির সভা কাল
শেষ পর্বে প্রধান অতিথি ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর তার মূল্যবান ভাষণ প্রদান করে বিশ্ববাসীর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে আখেরি মুনাজাত পরিচালনা করেন।