’আজকি রাত’ গানে নাচার নির্দেশ, অস্বীকৃতি জানালে গালি
ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের দুই নবীন শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন আইন ও বিচার বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ছয় শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, গত বুধবার ভোরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ‘সালাম ভিলা’ নামক একটি আবাসিক মেসে এ ঘটনা ঘটে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রান্নার আয়োজন করতে ভোররাত প্রায় ৩টার দিকে নবীন শিক্ষার্থী শাকিব হাসান হামীম ও আরমান মিয়াকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন অভিযুক্তরা। পরে রান্না চলাকালীন সময়ে শুরু হয় র্যাগিং, যা চলে ফজরের আজান পর্যন্ত।
ঘটনার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়া আরমান মিয়া নিজ বাড়ি কিশোরগঞ্জে ফিরে যান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে আর পড়াশোনা করবেন না বলে সহপাঠীদের জানান।
এদিকে বিষয়টি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে জানাজানি হলে ওই রাতেই সালাম ভিলার সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। এ সময় আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থীরাও ঘটনাস্থলে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হট্টগোল শুরু হয়। পরে প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শাকিব হাসান হামীম বলেন, ‘রাতে রান্না করে খাওয়া হবে বলে বাজার করতে পাঠানো হয়েছিল আমাদের। কিন্তু ভাইরা না আসায় আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। পরে রাত দুটোর পর আমাদের জোর করে ডেকে তাদের রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমাদের পরিচয় নেওয়া হয়, মুরগি বানানো হয়, এক পায়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এছাড়া তামান্না ভাটিয়ার অশ্লীল গানে অঙ্গভঙ্গি করে নাচানো হয় এবং অস্বীকৃতি জানালে গালাগাল করা হয়।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
অন্য ভুক্তভোগী আরমান মিয়া বলেন, ‘রাতে ঘুম থেকে জোর করে তুলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমাদের সিনিয়রদেরসহ র্যাগ দিবে এমন হুমকি দেন তারা। এছাড়া প্রক্টর স্যারকেও ভয় পান না তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম অনেক স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু শুরুতেই এমন অভিজ্ঞতায় সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে। তাই বাড়ি ফিরে গিয়েছিলাম। আজ ফিরে এসে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি।’
এ বিষয়ে প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘র্যাগিংয়ের ঘটনায় আজ ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’