‘কপাল খারাপ’ বলাটা কি ইসলামে জায়েজ?
‘কপাল খারাপ’ বা ‘ভাগ্য খারাপ’ এ ধরনের আক্ষেপ আমাদের দৈনন্দিন কথোপকথনে সাধারণ ঘটনা। কিন্তু ইসলামি বিশ্বাস ও আদর্শের আলোকে এ ধরনের উক্তি কতটা গ্রহণযোগ্য? এই প্রতিবেদনে কোরআন-সুন্নাহর দলিল, ইসলামিক স্কলারদের ব্যাখ্যা এবং মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ইসলামি দৃষ্টিতে তাকদিরের ধারণা
তাকদির দুই প্রকার ১. তাকদিরে মুবরাম (অপরিবর্তনীয় ভাগ্যলিপি) ও ২. তাকদিরে মুআল্লাক (ঝুলন্ত ভাগ্যলিপি)। তাকদিরে মুবরাম কখনোই পরিবর্তিত হয় না। আর তাকদিরে মুআল্লাক বান্দার নেক আমল, দোয়া ইত্যাদির মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়। সালমান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, দোয়া আল্লাহর ফয়সালাকে পরিবর্তন করাতে পারে। আর নেক আমল বয়সকে বৃদ্ধি করাতে পারে।’ (তিরমিজি: ২১৩৯)
এককথায়, তাকদির হলো আল্লাহর পূর্ণ জ্ঞানে ও হিকমতে সবকিছু পূর্বনির্ধারিত হওয়া। তবে এটি মানুষের চেষ্টা ও এখতিয়ার (স্বাধীন ইচ্ছা)কে অস্বীকার করে না। যেমন কোরআনে বলা হয়েছে- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে।’ (সুরা রাদ: ১১)
‘কপাল খারাপ’ বা ‘ভাগ্য খারাপ’ এ ধরনের আক্ষেপ আমাদের দৈনন্দিন কথোপকথনে সাধারণ ঘটনা। কিন্তু ইসলামি বিশ্বাস ও আদর্শের আলোকে এ ধরনের উক্তি কতটা গ্রহণযোগ্য? এই প্রতিবেদনে কোরআন-সুন্নাহর দলিল, ইসলামিক স্কলারদের ব্যাখ্যা এবং মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ইসলামি দৃষ্টিতে তাকদিরের ধারণা
তাকদির দুই প্রকার ১. তাকদিরে মুবরাম (অপরিবর্তনীয় ভাগ্যলিপি) ও ২. তাকদিরে মুআল্লাক (ঝুলন্ত ভাগ্যলিপি)। তাকদিরে মুবরাম কখনোই পরিবর্তিত হয় না। আর তাকদিরে মুআল্লাক বান্দার নেক আমল, দোয়া ইত্যাদির মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়। সালমান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, দোয়া আল্লাহর ফয়সালাকে পরিবর্তন করাতে পারে। আর নেক আমল বয়সকে বৃদ্ধি করাতে পারে।’ (তিরমিজি: ২১৩৯)
এককথায়, তাকদির হলো আল্লাহর পূর্ণ জ্ঞানে ও হিকমতে সবকিছু পূর্বনির্ধারিত হওয়া। তবে এটি মানুষের চেষ্টা ও এখতিয়ার (স্বাধীন ইচ্ছা)কে অস্বীকার করে না। যেমন কোরআনে বলা হয়েছে- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে।’ (সুরা রাদ: ১১)
আরও পড়ুন:
কোন সময় দোয়া করলে বেশি কবুল হয়?
‘কপাল খারাপ’ বলার ক্ষতি
‘কপাল খারাপ’ বললে দুটি সমস্যা দেখা দেয়: ১. আল্লাহর তাকদিরের প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ পায়। ২. নিজের দায়িত্ব এড়ানোর প্রবণতা বাড়ে।
রাসুল (স.) ইরশাদ করেন- তোমাদের কেউ যেন না বলে: ‘হায়, আমার যুগ/সময় বরবাদ! কারণ আল্লাহই হলেন সময়ের নিয়ন্ত্রক। (সহিহ মুসলিম)
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) ব্যাখ্যা করেন- ‘এ ধরনের কথা বললে আল্লাহর হিকমত ও ইলমকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়।’
ইমাম নববি বলেন, এ হাদিসে দুটি শিক্ষা: ১. আল্লাহই সব ঘটনার নিয়ন্ত্রক। ২. ভাগ্যকে দোষারোপ করা নিষিদ্ধ। (শারহু মুসলিম)
মনস্তাত্ত্বিক ক্ষতিকর দিক
নিষ্ক্রিয়তা: গবেষণায় প্রমাণিত, যারা ভাগ্যকে দোষারোপ করে, তাদের মোটিভেশন ৭৩% কমে যায় (সূত্র: Journal of Behavioral Science, ২০২১)।
আরও পড়ুন:
ক্ষমা চেয়ে ইসলামের পথে পরিচালক
হতাশা: ‘আমার দ্বারা কিছু হবে না’ এ ধরনের কথা ডিপ্রেশন বাড়ায়।
উদাহরণস্বরূপ একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ফেল করলে যদি বলে, ‘আমার কপালেই ফেল!’—তাহলে সে পরবর্তীতে পড়ালেখায় মনোযোগ হারায়। অথচ ইসলাম বলছে- ‘আল্লাহর উপর ভরসা রেখে আবার চেষ্টা করো!’
ইসলামি সমাধান কী
‘কপাল খারাপ’ না বলে বলবেন ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’
‘আমার ভাগ্যই ভালো না’ এভাবে না বলে বলবেন- ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিআমাল ওয়াকিল’
এই দোয়া করবেন- ‘আল্লাহুম্মা লা সাহলা ইল্লা মা জা'আলতাহু সাহলা’ (হে আল্লাহ! আপনি যা সহজ করেন, তা ছাড়া কিছুই সহজ নয়)।
সবর করবেন। কারণ কোরআনে বলা হয়েছে- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সবরকারীদের সাথে আছেন। (সুরা বাকারা: ১৫৩)
আরও পড়ুন:
হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ২১ দিন
সারসংক্ষেপ
‘কপাল খারাপ’ বলা শুধু একটি অভ্যাসগত ভুল নয়; এটি ঈমানি দুর্বলতাও বটে। একজন মুমিনের কর্তব্য হলো- আল্লাহর তাকদিরে সন্তুষ্ট থাকা, চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা। অতবএব, ভাগ্যের দোহাই দিয়ে হাল ছেড়ে না দিয়ে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে সামনে এগিয়ে যান। কারণ, কপাল তো আল্লাহর হাতেই!