রাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পরিসংখ্যান বিভাগে অধ্যয়নরত এক নারী শিক্ষার্থীকে চেম্বারে ডেকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের শিক্ষক ড. প্রভাস কুমার কর্মকারের বিরুদ্ধে।
ড. প্রভাস কুমার কর্মকার জনসংযোগ দপ্তরের সাবেক প্রশাসক এবং বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের সভাপতি। অন্যদিকে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী একই বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী।
ঘটনার পর সুষ্ঠু বিচার চেয়ে গত বুধবার বিভাগের সভাপতি ড. মো. রেজাউল করিম বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা। এ ঘটনা তদন্তে বিভাগের শিক্ষকদের দ্বারা গঠিত একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে বলে জানা গেছে।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট অধ্যাপক প্রভাস কুমার কর্মকার ভুক্তভোগী ছাত্রীকে তার চেম্বারে ডেকে শারীরিকভাবে ও মানসিকভাবে লাঞ্চিত করেন এবং বিকৃত মস্তিষ্কের মতো আচরণ করেন। মূলত ক্লাস এটেনডেন্সের পারসেন্টেজ জানতে ওই নারী শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের চেম্বারে যান। তখন শিক্ষক তাকে অন্য একদিন ফোন দিয়ে আসতে বলেন। পরবর্তী ৪ আগস্ট তিনি শিক্ষকের কক্ষে গেলে শিক্ষক তাকে পরীক্ষার সাজেশনের কথা বলে প্রশ্ন দেন এবং ছবি তুলতে মানা করেন। শুধু তা খাতায় লিখতে বলেন। ওই নারী শিক্ষার্থী লিখতে থাকা অবস্থায় তার বিভিন্ন গোপনীয় স্থানে অশোভন স্পর্শ করেন এবং কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব দেন বলে শিক্ষার্থীর মা অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা বলেন, ‘তার সঙ্গে খুবই মর্মান্তিক ও বিকৃত মস্তিষ্কের ঘটনা ঘটেছে। সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে এবং তাকে সাইকোলজিস্ট দেখানো হয়েছে। মেয়েটি কোনোভাবেই স্বাভাবিক হতে পারছে না এবং হাই পাওয়ারের ওষুধ খেতে হচ্ছে নিয়মিত। ট্রমার কারণে সে এখন পরিচিত মানুষদেরই মাঝেমধ্যে চিনতে পারছে না। কিছুক্ষণ পূর্বের কথাও মনে রাখতে পারছে না। মেয়েটির এই অবস্থা দেখে তার পরিবারও ভেঙ্গে পড়েছে। আমরা এইরকম ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক প্রভাস কুমার কর্মকারকে মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তাৎক্ষণিক সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেন। পরবর্তীতে ফোনটি বন্ধ করে দেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা গত বৃহস্পতিবার একটি সাইনিং কমিটি গঠন করে দিয়েছি। যারা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে। আর আমরা খুব দ্রুত সময়ের ভেতরেই এ তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছি। ওই শিক্ষককে বর্তমানে সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে।’