বাকৃবিতে শাস্তি পাওয়া ২৪ কর্মকর্তার পরিচয় মিলেছে
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় নিরীহ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের নির্যাতন এবং গত বছরের ৪ আগস্ট শান্তি মিছিলের নামে শেখ হাসিনার জুলুম, নির্যাতন ও গণহত্যার উসকানির অভিযোগে ২৪ জন কর্মকর্তাকে শাস্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যাদের মধ্যে আটজনকে বহিষ্কার, আটজনকে অপসারণ, সাতজনকে তিরস্কার এবং একজনকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৩২৮তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ বুধবার শাস্তি পাওয়া ২৪ জন কর্মকর্তার পরিচয় পাওয়া গেছে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযুক্ত কর্মকর্তারা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শারীরিক, মানসিক নির্যাতন এবং হয়রানি করেছেন। এ ছাড়া শেখ হাসিনার সমর্থনে গত বছর ৪ আগস্ট ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ শান্তি মিছিলে যোগদান এবং ‘ঘরে ঘরে খবর দে, এক দফার কবর দে’ স্লোগান দিয়ে মিছিল করেন। যার মাধ্যমে জুলুম, নির্যাতন ও গণহত্যার উসকানি ও সমর্থন প্রদান করে নিরীহ ছাত্র ও শিক্ষকদের ওপর হামলা, শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট, শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ নষ্ট, প্রশাসন তথা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শাস্তি প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- প্রকৌশল শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. বিমান চন্দ্র রায়, ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার এফ এম আনোয়ার হোসেন (বাবু), বাউএক উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবুল বাসার আমজাদ, বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরির এডিশনাল লাইব্রেরিয়ান মো খাইরুল আলম, কেন্দ্রীয় পুলের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো মেহেদ হাসান রাসেল, নিরাপত্তা শাখার সিনিয়র সহকারী রেজিস্ট্রার মো মাহমুদুল কবীর খান, খামার ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো আল মামুন ও প্যাথলজি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মানিক কুমার লামা।
চাকরি থেকে অপসারণ হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- সংস্থাপন শাখার এডিশনাল রেজিস্ট্রার আরিফ জাহাঙ্গীর, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার সহকারী পরিচালক এ. বি. এম. রেজাউর রহমান, উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কমিটির শাখা কর্মকর্তা মো সিয়াম আহমেদ, এডিশনাল রেজিস্ট্রার (ওএসডি) সৈয়দ মোহাম্মদ মাসাদুল হাসান (আকিক), এডিশনাল ট্রেজারার মো আতিকুজ্জামান, সীড সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ, পরিবহন শাখার সহকারী পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, নিরাপত্তা শাখার সিনিয়র সহকারী রেজিস্ট্রার মো মোস্তাফিজুর রহমান।
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
তিরস্কারের শাস্তি পাওয়া কর্মকর্তারা হলেন- ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো জিয়াউল হাসান, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. জহিরুল ইসলাম, শহীদ নাজমুল আহসান হল সিনিয়র ইমাম কারী মাওলানা মুফতি মোফাজ্জল হোসাইন সরদার, হেলথ কেয়ার সেন্টার সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, গ্রন্থাগার শাখার ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান মো. এমদাদুল হক, সহকারী রেজিস্ট্রার মো আল আমীন আল মাহমুদ ও আইসিটি সেলের সহকারী পরিচালক মো সোহেল রানা।
এ ছাড়া বাকৃবির সাবেক রেজিস্ট্রার মো অলি উল্লাহকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এই অর্থ তার পেনশন থেকে কর্তন করা হবে। তার বিরুদ্ধে শাস্তির অভিযোগে বলা হয়, তিনি নিজের প্রভাব খাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শান্তি মিছিলে যোগদানে বাধ্য করেন।এ ছাড়া তার নির্দেশে জুলাই আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তারেক বিন আনোয়ারের ওেপর হামলা হয়। তিনি মারাত্মকভাবে আহত হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই অর্থ তার চিকিৎসার জন্য দেওয়া হবে।