বাকৃবিতে ১৬তম দিনেও ক্লাসে ফিরলেন না শিক্ষার্থীরা

বাকৃবি প্রতিনিধি
১২ আগস্ট ২০২৫, ১৩:২৭
শেয়ার :
বাকৃবিতে ১৬তম দিনেও ক্লাসে ফিরলেন না শিক্ষার্থীরা

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কম্বাইন্ড (বি.এসসি ইন ভেটেরিনারি সায়েন্স অ্যান্ড অ্যানিমেল হাজব্যান্ড্রি) ডিগ্রির দাবিতে টানা ১৬ দিন ধরে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছেন পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন শুরুর পর থেকেই ওই অনুষদের ডিন অফিস ও প্রধান দুটি গেটে তালা দেওয়ায় প্রশাসনিক কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই অনুষদের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীরাও বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত ক্লাস বর্জন করে কম্বাইন্ড ডিগ্রির রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য প্রশাসনকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেন। নির্দিষ্ট সময়ে তা ঘোষণা না করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও ফার্মসমূহে অনির্দিষ্টকালের জন্য তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ‘প্রশাসনের তালবাহানা, মানি না মানব না’, ‘প্রশাসনের গদিতে আগুন জ্বালাও একসাথে’, ‘উই ওয়ান্ট কম্বাইন্ড’ স্লোগান দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গতকাল থেকে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে কম্বাইন্ড ডিগ্রির আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতায় পশুপালন অনুষদের নবীন শিক্ষার্থীরাও ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে অংশ নিতে দেখা গেছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অনুষদের নবীন এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা পশুপালন অনুষদের ৬১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় আন্দোলনে যোগ দিয়েছি। ক্লাস বর্জন করেছি। কম্বাইন্ড ডিগ্রির মাধ্যমে দেশে থেকে বৈষম্য দূর না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী মো. সিফাত সালেহীন বলেন, ‘গতকাল আমরা প্রশাসনকে কম্বাইন্ড ডিগ্রির রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য ২৪ ঘণ্টার সময় বেধে দিয়েছিলাম। আজ সেই সময় শেষ হয়েছে। প্রশাসনের অনুরোধে দুপুর ২টা পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দিয়েছি। যদি এই সময়ের মধ্যে তা ঘোষণা না করা হয়, তাহলে প্রশাসনিক ভবনে অনির্দিষ্টকালের জন্য তালা দেওয়া হবে। এরপর থেকে আলোচনা হলে মাঠে হবে, প্রশাসনে না।’

পশুপালন অনুষদের আরেক শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন সিয়াম বলেন, ‘আমাদের যুক্তিসঙ্গত দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াব না। দেশের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান এখন কম্বাইন্ড ডিগ্রির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। শুধুমাত্র আমরা কেন বঞ্চিত হব?’

এ বিষয়ে পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বারবার শ্রেণিকক্ষে ফেরার জন্য বলা হচ্ছে। আমাদের সঙ্গে তাদের সমস্যা নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু তারা তা শুনছে না।’

সেশনজটের শঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা আন্দোলন করে যদি সেমিস্টার দীর্ঘ করে, তাতে আমাদের কিছু করার নেই।’

ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান জানান, কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে এই অনুষদের শিক্ষকদের মতামত নেওয়া হয়েছে। বর্তমান দেশের চাকরির বাজার এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সরকারি পরিপত্রের চাহিদা বিবেচনা করে এই ডিগ্রির পক্ষে সবাই একমত হয়েছেন। একজন খামারি যদি একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দুই ধরনের সেবা পায়, তাহলে সে দুইজন ব্যক্তিকে মোটা অঙ্কের বেতন দিয়ে রাখবে কেন? দেশ এবং প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের স্বার্থে কম্বাইন্ড ডিগ্রি প্রয়োজন।