‘যুবদল নেতার সুপারিশে ছাড়া পেলেন ছাত্রলীগ নেতা’ সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ

অনলাইন ডেস্ক
০৩ আগস্ট ২০২৫, ১১:৩৬
শেয়ার :
‘যুবদল নেতার সুপারিশে ছাড়া পেলেন ছাত্রলীগ নেতা’ সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ

‘যুবদল নেতার সুপারিশে ছাড়া পেলেন ছাত্রলীগ নেতা’ শীর্ষক প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুবদল নেতা কৃষিবিদ কে. এম. সানোয়ার আলম। গতকাল শনিবার দৈনিক আমাদের সময়ের সম্পাদক বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে তিনি এ প্রতিবাদ জানান। 

চিঠিতে ছাত্রদল নেতা লিখেছেন, ‘গত ১ আগস্ট ২০২৫ তারিখে আপনার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ‘‘যুবদল নেতার সুপারিশে ছাড়া পেলেন ছাত্রলীগ নেতা’’ শীর্ষক প্রতিবেদনে আমার বিরুদ্ধে যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অসত্য, ভিত্তিহীন, ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি আমার বিরুদ্ধে প্রকাশিত ওই সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

তিনি লিখেছেন, ‘ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, আটক ছাত্রলীগ নেতা আল সাদি প্রিয়াল আমার সুপারিশে পুলিশ হেফাজত থেকে ছাড়া পেয়েছে এবং সে আমার সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে অবস্থান করছে- যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’

কে. এম. সানোয়ার আলম লিখেছেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, ওই আল সাদি প্রিয়াল নামক ছাত্রের সঙ্গে আমার কোনো প্রকার ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক কিংবা সামাজিক পরিচয় নেই। আমি কখনোই থানায় তার বিষয়ে কোনো সুপারিশ করিনি এবং হলে থাকার বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করিনি। আমার দীর্ঘ ২৫ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও ১৭ বছরের ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে রাজনীতির সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে আমি কখনোই ফ্যাসিবাদ বা তার অনুসারীদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারি না, করিনি এবং করব না।’ 

‘উল্লেখ্য যে, আমি ফ্যাসিস্ট হাসিনার রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ততার কারণে একাধিকবার শারীরিক নির্যাতন, রিমান্ড এবং কারাভোগের শিকার হয়েছি। যে ফ্যাসিস্টের কারণে আমি ও জাতীয়তাবাদী আদর্শের নেতাকর্মীরা এত কষ্ট, ত্যাগ-তিতীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন সেই ফ্যাসিষ্ট বা তার সহযোগিদের সহযোগিতার প্রশ্নই আসে না’ লেখেন এই নেতা। 

তিনি আরও লেখেন, ‘আমার বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদটি আমার রাজনৈতিক অবস্থান, ব্যক্তিত্ব এবং দীর্ঘ দিনের সংগ্রামী চেতনায় কালিমা লেপনের উদ্দেশ্যে প্রণীত হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

কে. এম. সানোয়ার আলম লিখেছেন, ‘উল্লেখ্য যে, ওই আল সাদি প্রিয়াল নিজেই এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, আমার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই এবং তার পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্তি পাওয়ার পেছনে কোনোভাবেই আমি জড়িত নই। বিষয়টি ইতোমধ্যে জনসমক্ষে তথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।’

‘এমতাবস্থায়, আমি আমার বিরুদ্ধে এই অসত্য, ষড়যন্ত্রমুলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি’, লেখেন ছাত্রদল নেতা। 

আরও পড়ুন: যুবদল নেতার সুপারিশে ছাড়া পেলেন ছাত্রলীগ নেতা

প্রসঙ্গত, রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুবদল নেতা কৃষিবিদ কে এম সানোয়ার আলমের সহযোগিতায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতারা আবাসিক হলে অবস্থান করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি নাশকতার পরিকল্পনা করার অভিযোগে গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কর্মী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থানরত তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন।

পরে গ্রেপ্তার এক শিক্ষার্থীকে কৃষিবিদ সানোয়ারের সুপারিশের ভিত্তিতে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আটক তিনজন হলেন- আল সাদি পিয়াল, মীর আসাদ আল রহমান সায়েম, তৌফিক ই মওলা। তবে পরবর্তীতে আল সাদি পিয়ালকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, যুবদল নেতা সানোয়ার ও আল সাদি পিয়াল একই এলাকা ময়মনসিংহের হওয়ায় আল সাদি পিয়ালকে হলে অবস্থান ও পুলিশের আটক থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করেছেন তিনি। 

আটকের পরে দেওয়া জবানবন্দিতে ছাত্রলীগ নেতা আল সাদি পিয়াল স্বীকার করেন, যুবদল নেতা কৃষিবিদ সানোয়ারের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে দীর্ঘদিন অবস্থান করছিলেন, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।