সেজদা থেকে হাতে ভর দিয়ে ওঠাই কি সঠিক পদ্ধতি?
একজন ঈমানদারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো নামাজ। তাই নামাজের সব মাসয়ালা জানা থাকা এবং যথাযথ আমল করা বাঞ্ছনীয়। সেজদা থেকে উঠার সঠিক নিয়ম জানতে চান অনেকে। এক্ষেত্রে মোস্তাহাব পদ্ধতি হচ্ছে- হাত দিয়ে জমিনে ভর না দিয়ে সরাসরি দাঁড়িয়ে যাওয়া। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন- كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنْهَضُ فِي الصَّلَاةِ عَلَى صُدُورِ قَدَمَيْهِ নবী (স.) নামাজে পায়ের পাতার ওপর ভর করে সেজদা থেকে দাঁড়াতেন। (জামে তিরমিজি: ২৮৮)
তবে অসুস্থতা বা অন্যকোনো ওজরবশত হাতের ওপর ভর দিয়ে ওঠা যাবে। হারেস (রহ) হজরত ইবরাহিম নাখায়ি (রহ) থেকে বর্ণনা করেন- أَنَّهُ كَانَ يَكْرَهُ ذَلِكَ، إِلاَّ أَنْ يَكُونَ شَيْخًا كَبِيرًا أَوْ مَرِيضًا ‘বয়োজ্যেষ্ঠ ও অসুস্থ ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে তিনি সেজদা থেকে ওঠার সময় হাতের ওপর ভর দেওয়াকে অপছন্দ করতেন।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৪০১৫)
সাহাবিরা পায়ে ভর দিয়েই সেজদা থেকে ওঠে যেতেন বলে অনেক বর্ণনা রয়েছে। আব্দুর রহমান ইবনে ইয়াজিদ (র.) বলেন, ‘আমি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-কে নামাজে ভালভাবে লক্ষ্য করলাম- তিনি সোজা উঠে পড়লেন, বসলেন না। তিনি আরো বলেন, তিনি ১ম ও ৩য় রাকাতে পায়ের ওপর ভর দিয়েই দাঁড়িয়ে যেতেন। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজজাক: ২৯৬৬,২৯৬৭; মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৩৩৯৯, ৪০০১) তাবারানি (র.) আলকাবির গ্রন্থে, বায়হাকি আস সুনানুল কুবরা গ্রন্থে (২/১২৫) এটিকে সহিহ বলেছেন। হায়সামি (র.) ‘মাজমাউজ জাওয়ায়েদ’ গ্রন্থে বলেছেন, এর রাবিগণ সহিহ হাদিসের রাবি। (দ্র: আছারুস সুনান, পৃ-১৫২)
আরও পড়ুন:
কোন সময় দোয়া করলে বেশি কবুল হয়?
ওয়াহব ইবনে কায়সান (র.) বলেন, ‘আমি আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রা.)-কে দেখেছি, তিনি যখন দ্বিতীয় সেজদা থেকে উঠতেন তখন পায়ের উপর ভর দিয়ে সোজা দাঁড়িয়ে যেতেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৪০০৫, সনদ সহিহ)
ইবনে ওমর (রা.) সম্পর্কে খায়ছামা (র.) বলেন, ‘আমি তাঁকে নামাজে পায়ের উপর ভর দিয়ে উঠে পড়তে দেখেছি। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা: ৪০০২) শাবি (র) বর্ণনা করেন, ‘ওমর (রা.), আলী (রা.) ও রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সাহাবিগণ নামাজে পায়ের ওপর ভর দিয়েই উঠে পড়তেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৪০০৪)
আরও পড়ুন:
হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ২১ দিন
অতএব, কোনো ওজর না থাকলে সেজদা থেকে ওঠার সময় হাত দিয়ে জমিনের ওপর ভর দিয়ে ওঠা অনুত্তম। (কিতাবুল আছল: ১/৯; আলমাবসুত, সারাখসি: ১/২৩; আলমুহিতুল বুরহানি: ২/১২৩; আলবাহরুর রায়েক: ১/৩২২; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/৭৫; রদ্দুল মুহতার: ১/৫০৬)
আরও পড়ুন:
চাঁদ দেখা কমিটির সভা কাল