জবানবন্দিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক আইজিপি মামুন
জুলাই আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে রাজনৈতিকভাবে নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ খুলেছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। আদালতে তার দেওয়া জবানবন্দির নথিতে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
গতকাল মঙ্গলবার আদালত সূত্র ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক প্রসিকিউটর এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জবানবন্দিতে মামুন বলেন, ‘১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতি রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় বৈঠক হতো। বৈঠকে অংশ নিতেন দুজন সচিব, এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিবির হারুন অর রশীদ, র্যাবের ডিজি, আনসারের ডিজি, এনটিএমসির জিয়াউল আহসানসহ সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা। এসব বৈঠক থেকেই সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের নির্দেশনা ও পরামর্শ দেওয়া হতো।’
আরও পড়ুন:
ভারত সফরে গেলেন প্রধান বিচারপতি
সাবেক আইজিপি বলেন, সরকারের ‘কোর কমিটির’ এক বৈঠকে সমন্বয়কদের গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত হয়। সেই অনুযায়ী ছয় সমন্বয়ককে আটক করে নেওয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। সেখানে তাদের ওপর মানসিক চাপ প্রয়োগ ও নির্যাতন চালানো হয়। আন্দোলন প্রত্যাহারে তাদের গণমাধ্যমে বিবৃতি দিতে বলা হয়।
জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার প্রধান হারুন অর রশীদকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘জিন’ বলে ডাকতেন। কারণ, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তাকেই সবচেয়ে কার্যকর মনে করা হতো।
সরকার পতনের দিন কীভাবে তিনি সেনানিবাসে আশ্রয় নেন, তাও উল্লেখ করেন সাবেক আইজিপি। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট বিকেলে একটি হেলিকপ্টার আসে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে। সেই হেলিকপ্টারে তিনি তেজগাঁও বিমানবন্দরে যান, সেখান থেকে সরাসরি সেনানিবাসে আশ্রয় নেন।
গত ১০ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে সাবেক আইজিপি বলেন, ‘আমি এ মামলার সব তথ্য বিস্তারিতভাবে ট্রাইব্যুনালের সামনে তুলে ধরতে চাই।’
পরে তিনি রাজসাক্ষী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করে এবং কারাগারে তাকে নিরাপত্তার জন্য আলাদা কক্ষে রাখার নির্দেশ দেন।