শিক্ষার্থীদের ৬ দফার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে জাবিতে মশাল মিছিল
মাইলস্টোন কলেজে সামরিক প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় মাইলস্টোন শিক্ষার্থীদের ছয়দফা দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে দোষীদের বিচারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে মশাল মিছিল।
গতকাল (মঙ্গলবার) রাত পৌনে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে "নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর" ব্যানারে মশাল মিছিল শুরু হয়ে বটতলা এলাকায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের, 'সেনা ঘাটি শহরে, শিশুরা কেনো কবরে'; মাইলস্টোনে লাশ কেনো, ইউনূস জবাব দে'; 'বিমানবাহিনী জবাব দে; 'জবাব তোমায় দিতেই হবে, নইলে গদী ছাড়তে হবে'; 'রাজাকারের দালারেরা, হুশিয়ার সাবধান', 'ভারতীয় দালালেরা হুশিয়ার সাবধান'; 'ব্যারাকের বেড়ালেরা ব্যারাকে ফিরে যাও' ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এ সময় তারা কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তুলে বলেন, ‘এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং একটি কাঠামোগত ব্যর্থতা ও অবহেলার ফল।’
তারা মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ৬ দফা দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত, সেনা-পুলিশি নিপীড়নের অবসান ও দায়ীদের শাস্তির দাবি জানান।
সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ফাইজা মেহজাবিন প্রিয়ন্তী বলেন, ‘আমরা একটা মর্মান্তিক সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। যে শিশুদের আকাশের দিকে তাকিয়ে স্বপ্ন দেখার কথা ছিল, সেই শিশুদের নিথর দেহ এখন আমাদের দেখতে হচ্ছে। শিশুদের টিফিনবক্স ফেরত এসেছে, কিন্তু তারা আর ফিরেনি। এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও দেখেছি বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ড, রানা প্লাজার ধসসহ এরকম প্রতিটি ঘটনাই ছিল রাষ্ট্রের অবহেলার ফল। কিন্তু বারবার এমন নির্মমতা আমাদের দেখতে হচ্ছে। এই নির্মমতা আজও থামেনি। বাংলাদেশের মানুষ আজ দিশেহারা। তারা জানে না, এতগুলো প্রাণ ঝরে যাওয়ার পর তারা কী করবে। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো যৌক্তিক বা শক্তিশালী পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। আরও দুঃখজনক হলো, এখনো নিখোঁজদের সঠিক সংখ্যা জানা যাচ্ছে না। আমাদের জুলাই এখনো শেষ হয়নি, দেশের মানুষের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।’
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নিকি জামান বলেন, ‘জুলাইয়ের পর থেকে আমাদের নির্মমতা বেড়ে গেছে। এখন আর রক্ত বা লাশ দেখলেও আর কিছুই মনে হয় না। বিমান দূর্ঘটনার ঘটনাস্থলে ক্রাউড নিয়ন্ত্রণ কিংবা প্রাথমিক চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করেও রাতে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। এর আগেও লাশের সংখ্যা গোপন রাখা হয়েছে। এখনো তা গোপন রাখা হচ্ছে। আমি চাই আহতরা যেন সুষ্ঠ চিকিৎসা পায় এবং নিহতদের মরদেহ যেন তাদের পরিবারে সঠিকভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।’