‘স্পিরিট অব দ্য কম্পিটিশন’ অ্যাওয়ার্ড জয় করলো প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা
নেদারল্যান্ডের হেগ শহরে আয়োজিত আইসিসি মুট কোর্ট কম্পিটিশনে (আইসিসিএমসিসি) প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির আইন ও বিচার বিভাগ আইবিএ স্পিরিট অফ দ্য কম্পিটিশন পুরস্কার অর্জন করেছে। গত ১১ জুন থেকে ১৮ জুন অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে বাংলাদেশ থেকে একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেয় প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী চার সদস্য বিশিষ্ট মুট কোর্ট টিমে ছিলেন সৈয়দ মাহিন, মাহবুবুর রহমান সোহাগ, সোনালী রাজবংশী এবং দীপাণ্বিতা চাকমা। তাদের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিভাগের প্রভাষক সাল সাবিল চৌধুরী এবং সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. রাফি ইবনে মাসুদ।
এই প্রতিযোগিতায়, বিশ্বের ৪৫টি দেশ থেকে আগত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আইন শিক্ষার্থীদের ৮৮টি দল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সদর দপ্তরে উক্ত আদালতের আদলে গঠিত কোর্ট রুমে তর্ক-বিতর্কে অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আইন, মানবাধিকার ও বিচার প্রক্রিয়ার বিষয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করে।
আন্তর্জাতিক বার অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ) এ বছর উক্ত প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো এই পুরস্কার প্রবর্তন করেছে।
গৌরবোজ্জ্বল এই অর্জনকে কেন্দ্র করে আজ রবিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর হোটেল লা ভিঞ্চি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের এই অর্জন শুধু তাদের ব্যক্তিগত নয়, বরং বাংলাদেশের আইন শিক্ষার একটি ঐতিহাসিক সাফল্য। এটি ভবিষ্যৎ আইন শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণার বাতিঘর হয়ে থাকবে। আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে যে, সঠিক দিকনির্দেশনা ও সহায়তা পেলে তারা বিশ্ব পরিমণ্ডলে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের নানান অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। কঠিন প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও নিরন্তরভাবে প্রতিযোগিতায় টিকে থেকে দৃঢ়তা, অধ্যবসায় এবং প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে দলটি এমনটাই জানান সাল সাবিল চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে স্কুল অব ল-এর ডিন মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম বলেন,‘আমরা অত্যন্ত গর্বিত যে আমাদের শিক্ষার্থীরা আইনের মতো একটি জটিল ও চ্যালেঞ্জিং বিষয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্যের সাথে নিজেদের প্রতিভা তুলে ধরেছে। এ অর্জন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক বার অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ) ও লেইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানান।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির আইন ও বিচার বিভাগ ইউজিসি কতৃক অনুমোদন প্রাপ্তির পর সামার ২০২৪ সেমিস্টার থেকে শিক্ষা কার্যক্রম যাত্রা শুরু করে। প্রেসিডেন্সির আইন ও বিচার বিভাগ শ্রেণীকক্ষে শিক্ষাদানের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের কো-কারিকুলার ও এক্সট্রাকারিকুলার কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষেত্রে জন্য উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তুলছে। তাছাড়া, শিক্ষার সঠিক মান বজায় রাখার জন্য ইউজিসি কর্তৃক নির্ধারিত প্রতি সেমিস্টারে ৪০টি আসনে ৪০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়া হচ্ছে। উক্ত বিভাগে যথাক্রমে ৪ বছর মেয়াদি এলএল.বি. (সম্মান) এবং এলএল.এম. (১ বছর ও ২বছর মেয়াদি) প্রোগ্রামসমূহে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে এলএলবি প্রোগ্রামে মোট ১১৯ জন ও এলএলএম এ ৬৯ জন শিক্ষার্থী লেখা পড়া করছে। উক্ত বিভাগের সকল শিক্ষকগণ ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে প্রথম স্থান অধিকার করা মেধাবীদের নিয়েই পরিচালিত হচ্ছে। প্রফেসর মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম 'ল' স্কুলের ডীন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মো: দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া, সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তারা উভয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে এলএল.বি ও এলএল.এম. ডিগ্রী অর্জন করেন। তাছাড়া অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দের সকলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে মেধা তালিকায় শীর্ষ স্হান দখল করে এলএল.বি. ও এলএল.এম. ডিগ্রী অর্জন করেছেন।
এতো কম সময়ের মধ্যেই এমন ঐতিহাসিক অর্জন করায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আগামীতে আরো ভালো করার জন্য প্রত্যয়ী করে তুলেছে।