শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীকে অচেতন করে ‘ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ’, আটক ২
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে ‘যৌন নির্যাতনের’ পর ভিডিও ধারণের অভিযোগে দুই শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাদের আটক করে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার তথ্য দিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক।
আটকরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাশ পার্থ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের আগে পূর্বপরিকল্পিতভাবে রিকাবিবাজারে একটি কনসার্টে যাওয়ার পূর্বে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ফাঁদে ফেলে তাকে অচেতন করে সুরমা আবাসিক এলাকার একটি মেসে নিয়ে যায় তারই সহপাঠী শান্ত তারা আদনান এবং স্বাগত দাস পার্থ। পরবর্তী তাকে জোরপূর্বক মেসে আটকে রেখে অচেতন অবস্থায় রাতভর পাশবিক নির্যাতন চালায় এবং ভিডিও ধারণ করে।
সকালে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর জ্ঞান ফিরলে সে নিজেকে শোচনীয় অবস্থায় অপরাধীদের রুমে আবিষ্কার করে। তবে কিছু বোঝার আগেই অপরাধীরা মেয়েটিকে জানায় যে, তারা তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছে এবং সেই সময়ের ভিডিও ধারণ করেছে। এরপর সে ভিডিও ও নগ্ন ছবি দিয়ে তারা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে নিয়মিত ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ঘটনাটি তার এক সহপাঠীকে জানানোর পর কয়েকজনের মধ্যে জানাজানি হলে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশের সহায়তায় তাদেরকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসা হয়। এরপর তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়।
আটককৃতদের মধ্যে শান্ত তারা আদনান নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় মামলার আসামি। এছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি, ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে ঘটনা জানাজানির পর আটককৃত শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি এমন ঘৃণ্য কাজের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ইসমাইল হোসেন বলেন, ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পাই। অভিযোগ পাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যেই ডিজিটাল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে প্রক্টর অফিসে হাজির করা হয়।
ওসি মো. জিয়াউল বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আমরা ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।