দুই দাবীতে কর্মবিরতি পালন করবে বিচার বিভাগের কর্মচারীরা
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের বেতন স্কেলে বেতন-ভাতা প্রদান এবং ব্লকপদ বিলুপ্ত করে স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়নের দুই দফা দাবীতে আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দুই ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করবে বিচার বিভাগের কর্মচারীরা।
গতকাল রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ নিম্ন আদালতের বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন।
গত ১৯ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মো. রেজোয়ান খন্দকার দুই দফা দাবী পেশ করেন এবং ৫ মের মধ্যে দাবির দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি না দেখলে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে অ্যাসোসিয়েশন।
আরও পড়ুন:
ভারত সফরে গেলেন প্রধান বিচারপতি
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সভাপতি বলেন, ‘২০০৭ সালে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক হওয়ার পর শুধু বিচারকদের জন্য ৬টি গ্রেড রেখে পৃথক পে-স্কেলসহ নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন করা হল। বিচারকদের সাথে নিম্ন আদালতের বিচার বিভাগীয় কর্মচারীরা একই দপ্তরে কাজ করলেও ওই পে-স্কেলের তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তাই জুডিশিয়াল সার্ভিস পে-স্কেলে বিচারকদের বেতন-ভাতাদি হলেও কর্মচারীরা জনপ্রশাসনের পে-স্কেলে বেতন-ভাতাদি পেয়ে থাকেন।’
রেজোয়ান খন্দকার বলেন, ‘সচিবালয়ে একজন অফিস সহায়ক চাকরিতে যোগদান করে উপসচিব পদে পদোন্নতি পেতে পারেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে অফিস সহকারী পদোন্নতি পেয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার পর্যন্ত হতে পারেন। পুলিশের কনস্টেবল থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পর্যন্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। অথচ শতভাগ বৈষম্যের শিকার অধস্তন আদালতের সহায়ক কর্মচারীরা। অনেক কর্মচারী পদোন্নতি ছাড়াই পদে ৩৮/৪০ বছর চাকরি করেও পদোন্নতি বঞ্চিত থেকে অবসরে যাচ্ছেন, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
এর আগে একই দাবি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত একাধিকবার আলোচনার পর বাস্তবায়নে আশ্বাস প্রদান করা হলেও এখনো দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা সাক্ষাৎ করে উক্ত দারি উপস্থাপন করেছে। কমিশন দাবি যৌক্তিক হিসেবে সহমত পোষণ করলেও অন্তর্বর্তী সরকারের নিকট প্রদান করা কমিশনের প্রতিবেদনের সুপারিশে অধস্তন আদালতের সহায়ক কর্মচারীরাদের বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারী হিসেবে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলে বেতন-ভাতাদি প্রদানের বিষয়ে কোনো প্রস্তাব রাখা হয়নি। এছাড়া চাকরি ও নিয়োগ বিধিমালার যুগোপযোগী সংস্কারের উল্লেখ করা হয়নি। তাই প্রধান বিচারপতি, আইন উপদেষ্টা ও আইন সচিবের কাছে বৈষম্যহীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মচারীদের বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলে বেতন-ভাতা প্রদান করবেন। বিদ্যমান জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের ১ম-৬ষ্ঠ গ্রেডের পরবর্তী ৭ম-১২তম গ্রেডভুক্ত করাসহ সব ব্লকপদ বিলুপ্ত করে যুগোপযোগী পদ সৃজনপূর্বক যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ রেখে স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়নের জোর দাবি করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দাবি ৫ মের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে সারা দেশের অধস্তন বিচার বিভাগের কর্মচারীরা সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা সর্বাত্মক কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করবে।’
